প্রকাশ: ২০ জুন, ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে পরিকল্পিতভাবে মাদক প্রয়োগ করে দলবদ্ধ ধর্ষণ এবং ঘটনার ভিডিও ধারণের অভিযোগে দুইজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদের মধ্যে একজন ক্যাম্পাসেরই থাকাকালীন ও অপরজন সুরমা আবাসিক এলাকা থেকে আটক হয়েছে, পরের দিন ভুক্তভোগী ছাত্রী কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন ।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ঈদের আগে রিকাবীবাজারের একটি কনসার্টে যাওয়ার কথা বলে তারা ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে। আইন অনুসারে অচেতন হওয়া অবস্থায় তাকে একটি মেসে নিয়ে যাওয়া হয় এবং রাতভর ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করা হয়। ভুক্তভোগীর মানসিক সংজ্ঞা ফেরার পর গতকাল সকালে শেষ পর্যন্ত তিনি জানতে পারেন ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের বিষয়, যা তুলে ধরেন সহপাঠীদের কাছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শান্ত তারা আদনান এবং নাট্য সংগঠন ‘দিক থিয়েটার’-এর কোষাধ্যক্ষ স্বাগত দাস পার্থ অন্তর্ভুক্ত। শান্ত এক সময় ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন এবং বিভিন্ন কারসাজি ও অব্যবস্থার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্বাগতও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ইসমাইল হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়ে ডিজিটাল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করা হয় এবং তারা দ্রুত প্রক্টর অফিসে হাজির হন। এরপর মামলা ও গ্রেপ্তার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে । উভয় পক্ষের বক্তব্য থেকে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা প্রতিষ্ঠা হওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ।
এই ঘটনা সামাজিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম ও নিরাপত্তা নিয়ে পুনর্বিবেচনায় উদ্বুদ্ধ করেছে। উচ্চশিক্ষার পরিবেশে এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সমাজ — ছবিটি স্পষ্ট করে দেয় যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবী। অবিলম্বে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভুক্তভোগী ও অন্যান্য শিক্ষার্থীর জন্য ভয়-তীব্রতা বাড়তে পারে।