প্রকাশ: ২৫শে জুন ২০২৫ । একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
একটি বাংলাদেশ অনলাইন
বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক ফের একবার শুরুটা ভালো করেও ইনিংসটা বড় করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ধৈর্য ও মনোযোগের পরীক্ষা দিতে দিতে যেভাবে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছিলেন, তাতে তার ইনিংসটিকে লম্বা হওয়ার ইঙ্গিতই দিচ্ছিল। কিন্তু প্রত্যাশার সেই বুনন ছিঁড়ে গেল এক দৃষ্টিসীমার বাইরের বাজে শটে। এমন আউট যেকোনো ব্যাটারের জন্যই হতাশার।
গত চলমান টেস্টের দ্বিতীয় দিনে, ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার স্পিনে কাবু হয়ে মুমিনুল বিদায় নেন মাত্র ২১ রানে। শুরুর সময়টা ছিল কঠিন, কিন্তু সেসব সামলে উঠার পরও নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না তিনি। সেই সময়ের পরিস্থিতিতে তার আউট হবার ধরনটি ছিল দলের জন্য একটি বড় ধাক্কা। কাভার অঞ্চল দিয়ে উড়ানো এক অবাঞ্ছিত ড্রাইভ—যেটা সরাসরি চলে যায় ফিল্ডারের হাতে। শট খেলার পর বলের গতিপথের দিকে তাকিয়ে মুমিনুল যেন নিজেই হতভম্ব হয়ে পড়েন। এমন আউট, যা তার ব্যাটিং সত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
এই আউটের মাধ্যমে ভাঙে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ৩৮ রানের একটি জুটি, যা গড়ে উঠেছিল ৭১ বলের দৃঢ়তায়। ততক্ষণে মুমিনুল খেলেছেন ৩৯ বল, মেরেছেন তিনটি চমৎকার চার, সংগ্রহ করেছেন ২১ রান। তার ইনিংসটি ঠিক এমন এক সময়ে ভাঙে, যখন বাংলাদেশের ইনিংসটি একটু একটু করে স্থিতিশীল হচ্ছিল।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৭ ওভারে ২ উইকেটে ৪৫ রান। ওপেনার সাদমান ইসলাম এখনো টিকে আছেন, আর তার সঙ্গী হলেন প্রথম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকানো অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দল এখনো ব্যাটিংয়ের গোড়াপত্তন পর্ব পার করার চেষ্টা করছে।
মুমিনুলের আউট নিয়ে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। এক সময় জাতীয় দলের ব্যাটিং স্তম্ভ ছিলেন তিনি, বিশেষ করে দেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিকতা হারিয়ে ফেলেছেন। ভালো শুরু নিয়েও ইনিংস বড় করতে না পারা তার ক্যারিয়ারের একটি চলমান সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এদিনের আউট সেই চেনা সমস্যার আরেকটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।
বাংলাদেশ দল এই মুহূর্তে একটি পুনর্গঠনের সময় পার করছে। তারুণ্যনির্ভর স্কোয়াডের মাঝে অভিজ্ঞদের দায়িত্ব আরও বেশি। মুমিনুলের মতো পরীক্ষিত ব্যাটারদের কাছ থেকে তাই প্রত্যাশাও বেশি। কিন্তু আজকের মতো ইনিংসগুলো দলকে যখন মাঝপথে হতাশ করে, তখন তা আত্মবিশ্বাসের ওপর যেমন আঘাত হানে, তেমনি টিম ম্যানেজমেন্টকেও করে দ্বিধান্বিত।
বাংলাদেশের এই ম্যাচটি শুরু থেকেই লড়াইয়ের। প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে সাবলীলতার অভাব স্পষ্ট। শুরুতে দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর শান্ত ও সাদমান মিলে হাল ধরার চেষ্টা করছেন। এখন দেখার বিষয়, দল কতটা দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারে এবং প্রথম ইনিংসে লড়াকু সংগ্রহ গড়ে তুলতে পারে কি না।
এদিকে মুমিনুলের জন্য সময় বোধহয় ফুরিয়ে আসছে। দলে টিকে থাকার জন্য তাকে শুধুই ভালো শুরু নয়, চাই বড় ইনিংস, চাই দায়িত্বশীলতা। নতুবা দলের কাঠামোতে তার জায়গাটা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে—এটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
একটি বাংলাদেশ অনলাইন ভবিষ্যতের প্রতিটি ইনিংসে তাকিয়ে থাকবে, মুমিনুল সেই চেনা ব্যাটিংয়ে ফিরতে পারেন কি না—নাকি এভাবেই হারিয়ে যাবেন এক সময়ের ‘মি. কনসিস্টেন্ট’।