সর্বশেষ :
রাজনৈতিক পরিচয়ের দাপট: বনানীতে যুবদল নেতার ক্ষমতার অপব্যবহার ও হোটেল-বারে সন্ত্রাসী হামলার সম্পূর্ণ চিত্র উন্মোচিত দেশমাতৃকার মুক্তি ও বিভীষিকাময় অধ্যায়ের অবসান: ইতিহাসের মোড় ঘোরানো এক সাহসী সৈনিকের মুক্তি আড়াইহাজারে যৌথবাহিনীর অভিযান: ইয়াবাসহ দুই নারী গ্রেপ্তার, পলাতক চিহ্নিত ডিলার তাসকিন-তানজিমের গতি ঝড়ে কুপোকাত লংকান ব্যাটিং লাইনআপ ঋতুপর্ণার দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে বাংলাদেশ: মিয়ানমারের মাটিতে লাল-সবুজের দৃঢ় প্রতিরোধ শ্যামনগরে রহস্যজনক অজ্ঞান পার্টির হানা: দুই বাড়িতে চুরি, হাসপাতালে ভর্তি ৬ জন গবেষণাভিত্তিক একাডেমিক পরিবেশ গঠনে যবিপ্রবিতে পরিবেশ উন্নয়ন বিষয়ক সেমিনার এক দিনের প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া: থাই রাজনীতিতে বিরল এক অধ্যায়ের সূচনায় দিনশেষেই ইতি নতুন অর্থবছরের শুরুতেই মোংলা বন্দরে ব্যস্ততা, একদিনে ভিড়েছে ৪টি বাণিজ্যিক জাহাজ ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে সরকারিভাবে পালনের ঘোষণা: সারাদেশে সাধারণ ছুটি, প্রজ্ঞাপন জারি

এক দিনের প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া: থাই রাজনীতিতে বিরল এক অধ্যায়ের সূচনায় দিনশেষেই ইতি

একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫
  • ১ বার
এক দিনের প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া: থাই রাজনীতিতে বিরল এক অধ্যায়ের সূচনায় দিনশেষেই ইতি

প্রকাশ: ২রা জুলাই, ২০২৫ | একটি বাংলাদেশ ডেস্ক | একটি বাংলাদেশ অনলাইন

থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আজকের দিনটি এক অভূতপূর্ব নজির হয়ে থাকছে। মাত্র এক দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী ও যোগাযোগমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত। সাংবিধানিক জটিলতা ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার পদ সাময়িকভাবে স্থগিত হওয়ায় এই ব্যতিক্রমী দায়িত্ব পান সুরিয়া। কিন্তু আজ বুধবার অর্থাৎ ২ জুলাই রাতেই তার এ সংক্ষিপ্ত মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে।

দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই সুরিয়া ব্যাংককে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ও একমাত্র দিনটির সূচনা করেন। এটি ছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রতিষ্ঠার ৯৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত একটি আনুষ্ঠানিকতা। এখানেই সৃষ্টি হয় মজার এক প্রতীকি মিল—যে কার্যালয়ের ৯৩ বছরের ইতিহাস, তার হাল ধরেছেন এমন একজন, যিনি সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন না ৯৩ ঘণ্টাও।

এই সংক্ষিপ্ত মেয়াদকে ঘিরে থাই গণমাধ্যমে যেমন বিস্ময় ও কৌতূহল প্রকাশ পেয়েছে, তেমনি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছেও এটি একটি ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সাংবাদিকরা যখন তার একদিনের মেয়াদ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছেন, তখন সুরিয়া সরাসরি কোনো মন্তব্য না করেই বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে এটুকু জানিয়েছেন যে, তার প্রধান দায়িত্ব হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাগজে স্বাক্ষর করা, যা নতুন প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম উইচায়াচাই-এর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ সুগম করবে।

থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ সুরিয়া বরাবরই পরিচিত ‘সমঝোতাপূর্ণ এবং সময়োপযোগী’ অবস্থান নেওয়ার জন্য। বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটের পরিবর্তনের সময় তিনি যে কৌশলে অবস্থান নিয়েছেন, তাতে তাকে অনেকেই ‘সুযোগসন্ধানী বাস্তববাদী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ক্ষমতার ধারাবাহিকতায় তার সদা-সচল অবস্থান তাকে একাধারে প্রভাবশালী ও বিতর্কিত রাজনৈতিক চরিত্রে পরিণত করেছে।

সুরিয়ার এই হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রেক্ষাপটটি গড়ে ওঠে থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালতের এক ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আদালত জানায়, প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা একটি কূটনৈতিক ঘটনায় মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত নৈতিকতার মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছেন—এমন ‘যথেষ্ট ভিত্তিসম্পন্ন’ অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে, কম্বোডিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়, যেখানে পেতংতার্ন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনকে ‘চাচা’ বলে সম্বোধন করেন এবং এক থাই সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধাচরণ করেন। এই ফোনালাপ জনমনে ক্ষোভ তৈরি করে এবং পরিণত হয় তার পদত্যাগের দাবিতে।

ফলে, সংবিধান অনুযায়ী সাময়িক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয় সুরিয়াকে। তবে এ দায়িত্ব কেবল ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হচ্ছে। আগামীকাল, ৩ জুলাই বৃহস্পতিবার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমথাম উইচায়াচাই দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ফেউ থাই পার্টির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ঘোষণা এসেছে, মন্ত্রিসভার পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে ফুমথাম হবেন ‘সহকারী প্রধানমন্ত্রী’, যার পদমর্যাদা বর্তমান উপপ্রধানমন্ত্রীর চেয়েও উচ্চতর।

এই ‘এক দিনের প্রধানমন্ত্রী’ হওয়া সত্ত্বেও সুরিয়ার ভূমিকা থাই রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ হয়ে থাকবে। থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে যেখানে জটিলতা, সমঝোতা এবং হঠাৎ পরিবর্তন এক সাধারণ রীতি, সেখানে সুরিয়ার এই অতি স্বল্পমেয়াদি শাসন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের জন্য যেমন গবেষণার বিষয়, তেমনি সাধারণ মানুষের জন্য তা হয়েছে আলোচনার খোরাক।

দিন শেষে প্রশ্ন রয়ে যায়—সুরিয়া তার এই অনন্য প্রধানমন্ত্রীত্বে কোনো স্মরণীয় রাজনৈতিক বার্তা রেখে যাবেন কিনা, নাকি এটি কেবল আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন করেই শেষ হবে। তবে একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, থাই রাজনীতির এই সংক্ষিপ্ত অধ্যায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও জায়গা করে নিয়েছে তার বিরলত্বের কারণেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া