প্রকাশ: ২৭শে জুন ২০২৫ | একটি বাংলাদেশ ডেস্ক | একটি বাংলাদেশ অনলাইন
এশিয়ান কাপ ফুটসালের বাছাইপর্বে শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অবস্থিত এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত ড্রয়ে বাংলাদেশ পড়েছে জি-গ্রুপে, যেখানে তাদের সঙ্গী হয়েছে ফুটসাল পরাশক্তি ইরান, স্বাগতিক মালয়েশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই গ্রুপটির প্রতিটি প্রতিপক্ষই এশিয়ার ফুটসালে ইতিমধ্যেই নিজ নিজ অবস্থান দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, ফলে বাংলাদেশের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি চ্যালেঞ্জিং গ্রুপ।
ড্র অনুযায়ী, এবারের বাছাইপর্বে অংশ নিচ্ছে মোট ৩১টি দেশ। আটটি গ্রুপে বিভক্ত করে আয়োজিত এই বাছাইপর্বে সাতটি গ্রুপে চারটি করে দল এবং একটি গ্রুপে তিনটি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। প্রতিটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও সেরা সাতটি রানার্সআপ দল সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে ২০২৬ সালের এশিয়ান কাপের মূল পর্বে। এই প্রতিযোগিতার আয়োজক দেশ ইন্দোনেশিয়া স্বাগতিক হিসেবে সরাসরি মূলপর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
জি-গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ এই গ্রুপে রয়েছে এশিয়ান ফুটসালের সবচেয়ে সফল দল ইরান। ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন ইরান কেবল এশিয়ার নয়, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ফুটসাল দল হিসেবে পরিচিত। তাদের বিপক্ষে লড়াই করা শুধু একটি ম্যাচ নয়, বরং অভিজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাস অর্জনের বড় একটি সুযোগ। অপরদিকে, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও ফুটসালে দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে শক্তিশালী ও সুসংগঠিত দল হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটসাল দলের জন্য এই বাছাইপর্ব হতে পারে নিজেদের সামর্থ্য যাচাইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। দেশটি এখনো আন্তর্জাতিক ফুটসালে বড় কোনো সাফল্য অর্জন না করলেও, সম্প্রতি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ঘরোয়া পর্যায়ে ফুটসাল লিগ আয়োজন এবং খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণে আগ্রহ দেখিয়েছে, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে ধরা যায়।
আগামী ২০ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বাছাইপর্বের খেলা। বাফুফের সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশ দলকে এই প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করতে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ও প্র্যাকটিস ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এই প্রস্তুতি কতটা কার্যকর হবে তা নির্ভর করবে খেলোয়াড় নির্বাচন, কোচিং স্টাফের দক্ষতা এবং প্রতিপক্ষ বিশ্লেষণের ওপর।
চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছর ২৭ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায়। এটি হবে এমন এক মঞ্চ, যেখানে এশিয়ার শীর্ষ ফুটসাল দলগুলো মুখোমুখি হবে। বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্য হয়তো এখানেই শেষ নয়, তবে বাছাইপর্ব পার হয়ে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেওয়াই হবে এই মুহূর্তে তাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।
বাংলাদেশের গ্রুপটি যতই কঠিন হোক, এই মঞ্চে খেলাটা নিজেই একটি অভিজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাসের ধাপ। ভবিষ্যতের বড় লক্ষ্যগুলোর দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এমন প্রতিযোগিতা শুধু প্রস্তুতি নয়, বরং আত্ম-উন্মোচনের সুযোগও। দেশের ফুটসাল ভক্তরা তাকিয়ে থাকবেন—এই যাত্রায় বাংলাদেশের তরুণ খেলোয়াড়রা কতটা দৃঢ়তা ও সাহসিকতা দেখাতে পারেন।