সর্বশেষ :
বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রগতি থমকে আছে কেন চাঁদাবাজির অভিযোগে গাজীপুরে বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার হলেন দুই ছেলে স্বাবলম্বী, তবুও মা-বাবাকে থাকতে হচ্ছে গোয়ালঘরে কেমন লাগল বিল গেটসের কাঁঠালের জাতভাই ডুরিয়ান খেয়ে? ‘বাংলা ব্লকেড’ শুরু, রাজধানী স্থবির গফরগাঁওয়ে ট্রাক ও অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২ ট্রিপল সেঞ্চুরিতে নতুন রেকর্ড গড়লেন অধিনায়ক উইয়ান মুল্ডার পশ্চিমতীরের স্বঘোষিত ‘হেবরন আমিরাত’: ফিলিস্তিনি সংগ্রামের বিরুদ্ধে নতুন বন্যা গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহু নারায়ণগঞ্জে তুহিন হত্যা মামলায় আইভীকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

চাঁদাবাজির অভিযোগে গাজীপুরে বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার হলেন

একটি বাংলাদেশ
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫
  • ৩ বার
চাঁদাবাজির অভিযোগে গাজীপুরে বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার হলেন

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ২৩: ৫২

গাজীপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের চার নেতাকে বহিষ্কার করেছে দলটির জেলা ও মহানগর শাখা। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এই চার নেতা দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মার্কেট ও ছোট দোকানিদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছিলেন। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একাধিক ভিডিও, অডিও ও বিভিন্ন অভিযোগপত্র ছড়িয়ে পড়লে গাজীপুর জেলা বিএনপির নেতারা বিষয়টি কেন্দ্রের দৃষ্টিতে আনেন। পরে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের তদন্ত শুরু হয়।

জেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান, গোপন অনুসন্ধানে চাঁদাবাজির প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের একাংশ লিখিতভাবে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগও জমা দিয়েছেন। একইসঙ্গে তারা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে বারবার অভিযোগ করেছেন যে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের কাছে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

বিএনপির গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যৌথভাবে এই বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বহিষ্কৃত নেতারা দলের নিয়ম-শৃঙ্খলা, নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শের পরিপন্থী কাজ করেছেন। এ কারণে দলীয় পদ ও প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তবে বহিষ্কৃতদের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কয়েকজন নেতা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। তারা বলছেন, গাজীপুরে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দলীয় হাইকমান্ডের কাছে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

গাজীপুর জেলা বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন, সম্প্রতি গাজীপুরে বিএনপির সাংগঠনিক তৎপরতা বেড়েছে। নতুন করে মিছিল, সভা ও সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে চাঁদাবাজির মতো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছে দল। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর বিএনপির পুনর্গঠনে স্থানীয় পর্যায়ের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শীর্ষ নেতৃত্ব এ ধরনের কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, গাজীপুরে বিএনপির একাধিক উপদল ও ব্যক্তিগত গ্রুপিং দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়। এ কারণে চাঁদাবাজির মতো ঘটনায় দলকে মাঝে-মধ্যেই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। জেলা কমিটি মনে করছে, এ ধরনের বিতর্কিত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দল তৃণমূল পর্যায়ে আস্থা হারাবে।

এদিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চাঁদাবাজির অভিযোগে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি, তবে কোনো ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত করবে।

এই বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে গাজীপুর বিএনপির ভেতরেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দূরে সরানোর কৌশল হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

তবে জেলা কমিটি স্পষ্ট জানিয়েছে, ভবিষ্যতে দলের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ালে তার বিরুদ্ধেও একইভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গঠনতন্ত্র মেনে প্রয়োজনে আরও বড় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তারা সতর্ক করেছেন।

বহিষ্কৃত চার নেতার বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে কেন্দ্রের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা ইউনিটের এই পদক্ষেপকে সমর্থন করা হবে এবং প্রয়োজনে কেন্দ্র থেকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হবে।

এই ঘটনার পর গাজীপুর বিএনপির স্থানীয় কর্মীদের মধ্যে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে—চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও অনৈতিক সুবিধা আদায়ের মতো বিষয়গুলো নিয়ে যাতে আর কোনো নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ না ওঠে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া