সর্বশেষ :
বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রগতি থমকে আছে কেন চাঁদাবাজির অভিযোগে গাজীপুরে বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার হলেন দুই ছেলে স্বাবলম্বী, তবুও মা-বাবাকে থাকতে হচ্ছে গোয়ালঘরে কেমন লাগল বিল গেটসের কাঁঠালের জাতভাই ডুরিয়ান খেয়ে? ‘বাংলা ব্লকেড’ শুরু, রাজধানী স্থবির গফরগাঁওয়ে ট্রাক ও অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২ ট্রিপল সেঞ্চুরিতে নতুন রেকর্ড গড়লেন অধিনায়ক উইয়ান মুল্ডার পশ্চিমতীরের স্বঘোষিত ‘হেবরন আমিরাত’: ফিলিস্তিনি সংগ্রামের বিরুদ্ধে নতুন বন্যা গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহু নারায়ণগঞ্জে তুহিন হত্যা মামলায় আইভীকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জে তুহিন হত্যা মামলায় আইভীকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫
  • ০ বার
নারায়ণগঞ্জে তুহিন হত্যা মামলায় আইভীকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আলোচিত রিকশাচালক তুহিন হত্যা মামলায় অবশেষে সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেত্রী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এই মামলায় আইভী ১১ নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর সোমবার (৭ জুলাই) নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঈনুদ্দিন কাদের এ আদেশ দেন।

রিমান্ড শুনানির সময় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতে উপস্থিত হন আইভী। আদালত তার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশকে দুই দিনের রিমান্ড অনুমোদন দেয়। এ সময় নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইয়ুম খান সাংবাদিকদের জানান, ‘সিদ্ধিরগঞ্জের তুহিন হত্যা মামলায় আদালত সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।’

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন’-এর এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ভয়াবহ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ওইদিন বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় এলাকায় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন রিকশাচালক তুহিন (৩৬)। বিক্ষোভটি আয়োজন করেছিলেন স্থানীয় কিছু শ্রমজীবী ও নাগরিক অধিকারকর্মীরা, যারা মূলত সামগ্রিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন।

তুহিনের মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রী আলেয়া আক্তার মীম গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। মামলার এজাহারে সাবেক মেয়র আইভীর নাম ১১ নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে। অভিযোগ অনুযায়ী, আন্দোলন দমন ও জনভীতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ‘সাজানো হামলা ও পরিকল্পিত গুলি’ চালানো হয়।

ঘটনাটির পরপরই নারায়ণগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একাধিক মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে আন্দোলনে নামেন। তাদের দাবি ছিল, তুহিনের মৃত্যু ছিল রাষ্ট্রীয় দমননীতির একটি ভয়াবহ উদাহরণ। সেই সময় আইভী প্রথমে এই মামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং একে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে আখ্যা দেন। তবে দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলাটি নতুন মোড় নেয় এবং তদন্তকারী সংস্থা আদালতে রিমান্ডের আবেদন করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনার দিনকার বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান এবং সেদিনকার রাজনৈতিক অবস্থান বিশ্লেষণ করে তারা নিশ্চিত হয়েছেন, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন কয়েকজন স্থানীয় রাজনীতিবিদ, যাদের মধ্যে আইভীর নামও রয়েছে।

এই রিমান্ডের মাধ্যমে মামলার তদন্তে নতুন কিছু তথ্য উঠে আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। অন্যদিকে, আইভীর সমর্থকরা এই রিমান্ডকে ‘রাজনৈতিক হয়রানি’ বলেই দাবি করছেন। তারা বলছেন, একজন জনপ্রিয় সাবেক মেয়রকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই এই মামলা এবং রিমান্ডের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।

ঘটনার প্রায় এক বছর পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে এই মামলাটি। রিকশাচালক তুহিনের মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, নিরপেক্ষ ও পেশাদার তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রকৃত দোষীরা দণ্ডিত হয় এবং রাজনৈতিক প্রভাব যেন বিচারপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত না করে।

এখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবাই নজর রাখছে মামলাটির পরবর্তী অগ্রগতির দিকে। আইভীর রিমান্ড শেষে তদন্তে কী নতুন তথ্য উঠে আসে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া