প্রকাশ: ০৭ জুলাই ‘২০২৫ | একটি বাংলাদেশ ডেস্ক | একটি বাংলাদেশ অনলাইন
ঢাকার প্রচণ্ড গরম আর ভ্যাপসা তাপদাহের মধ্যে মিরপুর থেকে ফার্মগেটে এসে এক ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, রোববার দুপুরের দিকে ফার্মগেট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ওই ব্যক্তি যিনি সামাজিক মাধ্যমে ‘আঙ্কেল’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছেন, তিনি মিরপুর এলাকা থেকে ফার্মগেটে আসেন কোনো ব্যক্তিকে বা কর্মজীবী মানুষদের পানি পান করানোর উদ্দেশ্যে। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচণ্ড গরমের কারণে রাস্তাঘাটে বা শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে পানির অভাব দেখা দিচ্ছে। অনেকে স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ নিয়ে রাস্তায় ঠাণ্ডা পানি বিতরণ করছেন। তিনি এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী কাজেই বেরিয়েছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
তবে দুপুরের প্রচণ্ড রোদে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার কারণে এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম বা সঠিক সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অসুস্থ হওয়ার পর আশপাশের লোকজন দ্রুত তাকে ছায়া এবং ঠাণ্ডা স্থানে নিয়ে যায় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও পথচারীরা তাকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তিনি তাপঘাত বা হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই তার এই মানবিক কাজের জন্য শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। অনেকে একইসাথে এ ধরনের কাজে বের হলে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি, সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সঠিক সময় নির্বাচন করার ওপর জোর দিয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত গরমে দীর্ঘক্ষণ রোদে কাজ করলে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। বিশেষ করে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি থাকে, তাই এই সময় বাইরে বেশি সময় থাকা বিপজ্জনক হতে পারে।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপপ্রবাহ বা হিটস্ট্রোক এড়াতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শরীরের পানি শূন্যতা রোধ করা, হালকা কাপড় পরা এবং ছায়াযুক্ত বা বায়ু চলাচলপূর্ণ স্থানে অবস্থান করা। একইসাথে হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ যেমন মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত ঘাম, বমি ভাব, দুর্বলতা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া দেখা দিলে দ্রুত ছায়া বা শীতল স্থানে নিতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এ ঘটনার পর অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছেন, যে কেউ যদি স্বেচ্ছাসেবী বা মানবিক কাজে এগিয়ে আসতে চান, তাহলে অবশ্যই গরমের সময় শরীরের প্রতি যত্নশীল থাকা, পর্যাপ্ত পানি পান করা, হালকা খাবার খাওয়া এবং প্রয়োজনে ছাতা বা টুপির মতো সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করার পরামর্শ মানা উচিত।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ‘আঙ্কেল’ এখন চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন এবং শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ বোধ করছেন। তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন স্বজন ও সাধারণ মানুষ। একইসাথে এই ঘটনার মাধ্যমে সমাজে মানবিক উদ্যোগের পাশাপাশি নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসচেতনতা বিষয়েও নতুন করে আলোচনা তৈরি হয়েছে।