প্রকাশ: ০৫ জুলাই, ২০২৫ | নিজস্ব সংবাদদাতা | একটি বাংলাদেশ অনলাইন
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এক বিশেষ অভিযানে জুয়া খেলার সময় ছয়জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার চর সলিমাবাদ গ্রামের একটি টিনশেড ঘরের মেঝে থেকে তাদের আটক করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন চৌহালী থানার পুলিশ ফোর্স, যারা স্থানীয়ভাবে বহুল আলোচিত শাহীন তালুকদারের বসতবাড়ির টিনের ঘরে এই জুয়ার আড্ডার সন্ধান পান।
আটক ব্যক্তিদের সবাই স্থানীয় বাসিন্দা। তাদের মধ্যে রয়েছেন—চর বিনানুই গ্রামের মৃত হারুন মিয়ার ছেলে গনি মিয়া (২৯), রেহাই পুখুরিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে শাহিন (৩০), বক্কার সরকারের ছেলে বাবুল (৫৪), মৃত আজিজুল ব্যাপারীর ছেলে আব্দুল বাতেন (৫২), মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে সোলাইমান হোসেন (৪৩) এবং খাষপুকুরিয়া দক্ষিণ পাড়ার রফিক (৪৫)।
চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বারিক জানান, অভিযানে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যরা অনেক আগেই জুয়ার আড্ডার বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। এরপর পরিকল্পিতভাবে অভিযান পরিচালনা করে ওই ঘর থেকে হাতে-নাতে তাদের আটক করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত ব্যক্তিরা জুয়া খেলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শনিবার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় গোপনে জুয়ার আড্ডা বসত। স্থানীয়রা অনেক সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় এসব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল কিছু ব্যক্তি। এই অভিযান এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং সাধারণ মানুষ এটিকে স্বস্তির নিঃশ্বাস হিসেবে দেখছেন।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “জুয়া সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি। এটি শুধু ব্যক্তিগত নয়, সামাজিক ভারসাম্যও নষ্ট করে। তাই এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে অভিযান চলবে এবং কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
তিনি আরও জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাদক, জুয়াসহ সকল অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে চলা হচ্ছে। জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা তথ্য দিন, আমরা ব্যবস্থা নেব।”
এ ঘটনায় চৌহালী থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাবার কথাও জানানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করছেন, এই অভিযান হবে একটি সতর্কবার্তা এবং ভবিষ্যতে আর কেউ এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার সাহস করবে না।
সার্বিকভাবে চৌহালীতে এ ধরনের আইনি পদক্ষেপ এলাকার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করছেন সচেতন মহল।