সর্বশেষ :
তানজিন তিশা: ‘দুইটা বিয়ে করেছি, তিন নাম্বারের প্রস্তুতি চলছে’—গুজব নিয়ে মুখ খুললেন আলোচিত অভিনেত্রী ট্রাম্পের নতুন শুল্ক যুদ্ধ: ১২ দেশের পণ্যে সোমবার থেকে আসছে বাড়তি শুল্ক দেশের উন্নয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: ড. এনামুল হক অবৈধ সরকারের প্রলোভনে এমপি হয়েছেন সাকিব’: আমিনুল হকের কঠোর মন্তব্য নার্সদের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু ইরান সাক্ষাতের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও পরিদর্শনের অনুমতি দিচ্ছে না’: ট্রাম্প পঞ্চাশেরও অধিক মানুষকে সামনে গুলিতে নিহত হতে দেখেছি” — আলী আহসান জুনায়েদ জুলাই বিপ্লবকে কটাক্ষ করে ফেসবুক পোস্ট—কনস্টেবল রনি সাময়িক বরখাস্ত আমরা দিই, নেই না”—চাঁদা বিতর্কে মুফতি ফয়জুল করিমের সোজাসাপ্টা জবাব গাজায় নিজেদের গুলিতে নিহত ৩১ সেনা: ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দুর্বল সমন্বয় প্রশ্নবিদ্ধ

অতিমুনাফায় নয়, সংযমে শান্তি—ইসলামী আদর্শেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব: পরিবেশ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫
  • ০ বার
অতিমুনাফায় নয়, সংযমে শান্তি—ইসলামী আদর্শেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব: পরিবেশ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫ । নিজস্ব প্রতিবেদক । একটি বাংলাদেশ অনলাইন

ব্যবসা শুধু লাভের জন্য নয়, বরং মানবিক দায়বদ্ধতার সঙ্গে সমাজের কল্যাণে কাজ করাই ইসলামী অর্থনীতির মূল দর্শন—এমনই মত দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, “ইসলাম অতিমুনাফা সমর্থন করে না। প্রয়োজন ও চাহিদার মধ্যে পার্থক্য করাই ইসলামী অর্থনৈতিক নীতির মূল শিক্ষা।”

শনিবার (৫ জুলাই) রাজধানীর গুলশানের হোটেল বেঙ্গল ব্লুবেরিতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সামাজিক ব্যবসা সম্মেলন (ISBS) ২০২৫-এ ‘মুসলিম বিশ্বের তিনটি শূন্য অর্জনে এনজিও নেতৃত্ব’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলাম ও সামাজিক ব্যবসার আদর্শের সমন্বয় ঘটিয়ে বৈষম্যহীন, সহনশীল এবং পরিবেশবান্ধব পৃথিবী গঠনের আহ্বান জানান তিনি।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আজকের দুনিয়ায় অর্থনৈতিক নীতিতে মানবিকতা অনুপস্থিত। আমরা মুখে মূল্যবোধের কথা বলি, কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে সেগুলো বাস্তবায়ন করি না। আমাদের জীবনে নৈতিকতা, সংযম এবং দায়িত্বশীলতা ফিরিয়ে আনতে হবে। ভোগ নয়, সংযমই হওয়া উচিত লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন, “আমাদের যুদ্ধ চিরতরে বন্ধ করতে হবে, আরম্ভ করতে হবে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ ও সহযোগিতার নতুন যুগ।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইসলাম কেবল উপদেশ দিয়ে থেমে থাকে না—বরং এটি বাস্তবসম্মত ও কার্যকর পথ দেখায়। সামাজিক ব্যবসা ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে ইসলামের শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তা সমাজে শান্তি ও ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে পারে।

ইসলামী অর্থনীতির অন্যতম প্রধান উপাদান ‘যাকাত’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যাকাত একটি সরাসরি মানবিক কাঠামো। আধুনিক কর ব্যবস্থার তুলনায় যাকাত দারিদ্র্য বিমোচনে অনেক বেশি কার্যকর ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করে।” তিনি বলেন, দাতার দায়বদ্ধতা এবং গ্রহণকারীর মর্যাদা রক্ষায় যাকাত একটি শ্রেষ্ঠ মডেল হিসেবে কাজ করে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্ব যদি সত্যিকার অর্থে একত্রে কাজ করে এবং থ্রি-জিরো মডেল (শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব, শূন্য নিঃসরণ) অনুসরণ করে, তবে তা বৈশ্বিক পরিবর্তনে প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি এ লক্ষ্যে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য, সহযোগিতা ও যৌথ উন্নয়ন কৌশল গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী প্রফেসর ড. হালিস ইউনুস এরসোজ, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী, তুরস্কভিত্তিক সংগঠন ইউএনআইডব্লিউ-এর মহাসচিব ও ফুজুল সেভিংস ফাইন্যান্স ইনকের চেয়ারম্যান ইউপ আকমাল, ইউএনআইডব্লিউ-এর হাই অ্যাডভাইজরি বোর্ডের সদস্য ও সওয়াবের চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুজ্জামান, আইআইআইটি বাংলাদেশের প্রতিনিধি ও বিআইআইটির মহাপরিচালক ড. এম আবদুল আজিজ এবং ইউএনআইডব্লিউ-এর কাউন্সিল সদস্য ও কৃষিবিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আলী আফজাল।

সম্মেলনে বক্তারা সামাজিক ব্যবসার শক্তি, ইসলামী অর্থনৈতিক নীতির নৈতিক দিক এবং মুসলিম বিশ্বের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, ইসলাম একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির শিক্ষা দেয়, যেখানে সব শ্রেণির মানুষের কল্যাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

এই সম্মেলনটি মুসলিম বিশ্বের সামাজিক ব্যবসায় আগ্রহী সংগঠন, অর্থনীতিবিদ ও তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি বড় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। এতে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আধুনিক অর্থনৈতিক কাঠামোর সমন্বয়ে ভবিষ্যৎ উন্নয়নের রূপরেখা নতুনভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। বক্তাদের অভিমত, যদি আদর্শ, মূল্যবোধ ও বাস্তবতা একসঙ্গে চলতে পারে, তবে মুসলিম বিশ্ব শুধু নিজস্ব অগ্রগতি নয়, বরং বিশ্ব শান্তি ও মানবকল্যাণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া