প্রকাশ: ০৫ জুলাই ‘২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
দলকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন আগের ম্যাচে। ঝলমলে ফিফটির ইনিংসে তানজিদ হাসান তামিম যেমন দলকে আস্থার বার্তা দিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই প্রত্যাশা ছিলো দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও। কিন্তু এবার তার ইনিংস শেষ হলো ব্যাট ছুঁয়ে কিপারের গ্লাভসে বল জমা পড়ার মধ্য দিয়েই। বাংলাদেশের ইনিংস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ড্রেসিং রুমের পথে হাঁটলেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে তামিমকে নিয়ে প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী। কারণ, শুধু প্রথম ওয়ানডেতে নয়—সাম্প্রতিক ফর্মেও তিনি ছিলেন উজ্জ্বল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলেছিলেন একটি ঝলকানো ফিফটি, এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষেও দেখিয়েছিলেন সঙ্গত ব্যাটিং নৈপুণ্য। এমন ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের পর যখন তিনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে হাফসেঞ্চুরি করেন, তখন তাকে ঘিরে আশার আলো ছড়িয়ে পড়ে পুরো ড্রেসিং রুমে।
কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে আশার সেই আলো নিভে যায় ইনিংসের তৃতীয় ওভারে। আসিথা ফার্নান্দোর হাতে বল তুলে নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক। ফার্নান্দো ওভার দ্য উইকেট থেকে বল করে যাচ্ছিলেন তামিমকে। ওভারের তৃতীয় বলেই তিনি চালিয়ে দেন একটি নাকল ডেলিভারি। বলটি সরে যাচ্ছিল লেগ-স্টাম্পের বাইরে অ্যাঙ্গেলে। সেই বল তাড়া করে ব্যাট চালিয়ে দেন তামিম। কিন্তু বল ছুঁয়ে যায় ব্যাটের বাইরের কানায়। উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিস কোনো ভুল করেননি। কেপিং গ্লাভসে বল জমা পড়তেই উল্লাসে ফেটে পড়ে লঙ্কান শিবির।
এমন আউট নিশ্চিতভাবেই ভীষণ হতাশ করেছে বাংলাদেশি ব্যাটিং ইউনিটকে। কারণ, তামিমের উপর নির্ভর করেই গড়া হয়েছিল ব্যাটিং অর্ডারের মেরুদণ্ড। তার আগেভাগে ফিরে যাওয়ায় ম্যাচের শুরুতেই চাপে পড়ে যায় টাইগাররা। স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ১০ রান, আর প্রথম উইকেট পতনের ধাক্কায় ছন্দপতন শুরু হয়ে যায়।
তামিমের এই বিদায় যেমন তার নিজের আত্মবিশ্বাসে আঘাত হানতে পারে, তেমনি দলের মনোবলেও প্রভাব ফেলেছে স্পষ্টভাবেই। আগের ম্যাচে তার হাফসেঞ্চুরি এক প্রকার প্রতিশ্রুতি ছিল পরবর্তী উন্নতির, যা আজকের আউটে থেমে গেল মাঝপথেই।
বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা হয়তো এখনই তাকে দোষারোপ করতে চাইবেন না। কারণ ফর্ম ও প্রতিভা—দুটিই আছে এই তরুণ ওপেনারের। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—যে ব্যাটসম্যান এতটা সম্ভাবনার বার্তা দেন, তিনি কি পারছেন তা পূরণ করতে?
দ্বিতীয় ম্যাচে শুরুতেই এই ব্যর্থতা যেন পুরো দলের পারফরম্যান্সের ওপর এক অশনি সংকেত হয়ে দেখা দেয়। এখন প্রশ্ন হলো, তামিমের এমন ব্যর্থতার পর কে এগিয়ে আসবে দলের ভার কাঁধে তুলে নিতে? এবং পরবর্তী ম্যাচগুলোতে তামিম নিজেকে কিভাবে সামলে নিয়ে আবার সেই আস্থার জায়গায় ফিরতে পারেন—তা সময়ই বলে দেবে।