প্রকাশ: ৩০শে জুন ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা
একটি বাংলাদেশ অনলাইন
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অভ্যন্তরীণ কাঠামোয় আবারও গুরুত্বপূর্ণ রদবদল করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর নিরস্ত্র পরিদর্শক পর্যায়ের সাতজন কর্মকর্তাকে ভিন্ন ভিন্ন থানায় ও বিভাগে বদলি করা হয়েছে। রোববার (২৯ জুন) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি অফিস আদেশে এই বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এই পদক্ষেপটি নেয়া হয়েছে ডিএমপির কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে এবং দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গতিশীল নেতৃত্ব ও অঞ্চলভিত্তিক পুলিশের উপস্থিতি আরও কার্যকর করতে এই পুনর্বিন্যাস সময়োচিত ও প্রশাসনিক বিবেচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন আইন-শৃঙ্খলা বিশ্লেষকরা।
বদলির তালিকায় উঠে এসেছে ঢাকার বিভিন্ন থানার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের নাম। উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমানকে বদলি করে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার স্থানে উত্তরা পশ্চিম থানার নতুন ওসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লাইনওয়ারে দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুর রহিম মোল্লা।
এছাড়া লাইনওয়ার থেকে তিনজন পুলিশ পরিদর্শককে ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ পরিদর্শক শেখ ফরিদ উদ্দিনকে গোয়েন্দা বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে, যা তার পেশাগত অভিজ্ঞতার নতুন অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। একইভাবে মনিরুজ্জামানকে খিলক্ষেত থানার অপারেশন শাখায়, আজিজুর রহমানকে আদাবর থানার অপারেশন শাখায় এবং মো. মফিজ উদ্দিনকে ওয়ারী থানার অপারেশন বিভাগে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে আরেক আদেশে গুলশান থানার বর্তমান ওসি মো. মাহমুদুর রহমানকে ডিএমপির কেন্দ্রীয় সংরক্ষণ দপ্তরে বদলি করা হয়েছে। সাধারণত এ ধরনের কেন্দ্রীয় সংরক্ষণ দপ্তরে বদলিকে প্রশাসনিক রদবদলের অংশ হিসেবেই দেখা হয়।
ডিএমপি সূত্র বলছে, এসব রদবদল নিয়মিত প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার অংশ হলেও বর্তমানে রাজধানীতে চলমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের তৎপরতা আরও কার্যকর করতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং নির্দিষ্ট এলাকার চাহিদা বিবেচনায় নিয়েই বদলির এই তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা বিশ্লেষকদের মতে, পুলিশের মতো একটি কৌশলগত বাহিনীতে এ ধরনের রদবদল কখনও শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বদলি নয়; বরং এটি পুরো বাহিনীর গতিপথ নির্ধারণে, অপরাধ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ এবং সামগ্রিক পুলিশি প্রশাসনের জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠারও ইঙ্গিত দেয়।
উল্লেখ্য, রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপি নিয়মিতভাবে অভ্যন্তরীণ দায়িত্ব পুনর্বিন্যাস করে থাকে। মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা মূলত ব্যবস্থাপনা কাঠামোর স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এবারের বদলিও তেমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সর্বোপরি, এই রদবদলের ফলে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে জনসাধারণের প্রত্যাশা থাকবে আরও বেশি পেশাদারিত্ব, দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে অধিক আন্তরিকতা প্রদর্শনের। এখন দেখার বিষয়, এই পুনর্বিন্যাস মাঠপর্যায়ে কতটা কার্যকর প্রভাব ফেলতে পারে।