সর্বশেষ :
বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রগতি থমকে আছে কেন চাঁদাবাজির অভিযোগে গাজীপুরে বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার হলেন দুই ছেলে স্বাবলম্বী, তবুও মা-বাবাকে থাকতে হচ্ছে গোয়ালঘরে কেমন লাগল বিল গেটসের কাঁঠালের জাতভাই ডুরিয়ান খেয়ে? ‘বাংলা ব্লকেড’ শুরু, রাজধানী স্থবির গফরগাঁওয়ে ট্রাক ও অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২ ট্রিপল সেঞ্চুরিতে নতুন রেকর্ড গড়লেন অধিনায়ক উইয়ান মুল্ডার পশ্চিমতীরের স্বঘোষিত ‘হেবরন আমিরাত’: ফিলিস্তিনি সংগ্রামের বিরুদ্ধে নতুন বন্যা গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহু নারায়ণগঞ্জে তুহিন হত্যা মামলায় আইভীকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহু

একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫
  • ১ বার
গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহু

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫ । একটি বাংলাদেশ ডেস্ক । একটি বাংলাদেশ অনলাইন

একটানা ২১ মাস ধরে চলা রক্তক্ষয়ী গাজা যুদ্ধের মধ্যে আশার আলো দেখা যাচ্ছে নতুন করে। চলমান সংঘাতের নিষ্ঠুর বাস্তবতা ও মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বর্তমানে অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে। লক্ষ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে একটি টেকসই যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা উন্মোচিত করা।

ওয়াশিংটন পৌঁছানোর আগে নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানান, এই সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো গাজা যুদ্ধ বন্ধে আলোচিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা। বিমানে ওঠার আগে তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি সমঝোতার দিকে এগোচ্ছি, যা আমাদের নির্ধারিত শর্তের সাপেক্ষে কার্যকর হতে পারে। আমি বিশ্বাস করি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি সম্ভব।”

এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের জানান, তিনি গাজায় সংঘাত বন্ধে অত্যন্ত দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, “চলতি সপ্তাহেই একটি চুক্তি হবে বলে আমি মনে করি।” ট্রাম্পের বক্তব্য এবং নেতানিয়াহুর সফর—দুই মিলে আন্তর্জাতিক মহলে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আশাবাদের হাওয়া তৈরি করেছে।

ওদিকে, রোববার সন্ধ্যায় কাতারে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনার নতুন একটি ধাপ শুরু হয়েছে। আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সক্রিয় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যারা যুদ্ধবিরতির একটি ছক তৈরি করেছে। প্রস্তাবটি অনুযায়ী, আগামী ৬০ দিনের জন্য গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং বন্দিমুক্তির একটি ধাপে ধাপে রূপরেখা অনুসরণ করা হবে।

তবে এই আলোচনার ফল ইতিবাচক হবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, উভয় পক্ষের মধ্যে গভীর অবিশ্বাস, অতীতের সমঝোতা ভঙ্গের অভিজ্ঞতা এবং আঞ্চলিক ভূরাজনীতির চাপে এই শান্তি আলোচনা বারবার ভেস্তে গেছে। ফলে বর্তমান প্রক্রিয়াটিকেও অত্যন্ত সতর্ক দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছে কূটনৈতিক মহল।

এর মধ্যেই গাজায় পরিস্থিতি ভয়াবহ। ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার বোমা বর্ষণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অসংখ্য আবাসিক এলাকা। হাসপাতাল, স্কুল, খাদ্যভাণ্ডার—সবকিছুই আক্রান্ত। হাজার হাজার সাধারণ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য এবং চিকিৎসাসেবা প্রায় অনুপস্থিত। মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে ‘একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম বড় মানবিক সংকট’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মুসলিম বিশ্বের একাধিক দেশ এই মুহূর্তে গাজা যুদ্ধ বন্ধে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। তবুও বাস্তবতা হলো, ইসরাইল এবং হামাস—উভয়ের মধ্যেই কৌশলগত কঠোরতা এবং রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ প্রবলভাবে কাজ করছে। ফলে যুদ্ধবিরতি যতটা জরুরি, বাস্তবায়ন ততটাই জটিল।

নেতানিয়াহু–ট্রাম্প বৈঠক যদি সত্যিই কোনো সমঝোতার ভিত্তি স্থাপন করতে পারে, তবে হয়তো দীর্ঘদিনের এক রক্তক্ষয়ী অধ্যায়ের সমাপ্তি টানা সম্ভব হবে। কিন্তু এই সম্ভাবনা কতটা বাস্তব, তা নির্ভর করবে আলোচনার আন্তরিকতা, বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক চাপের প্রতিক্রিয়ায় উভয় পক্ষ কতটা নমনীয় হতে পারে তার ওপর।

এই মুহূর্তে বিশ্বের চোখ ওয়াশিংটনের দিকে। নেতানিয়াহুর এই সফর, ট্রাম্পের প্রত্যাশা এবং কাতারের আলোচনা সব মিলিয়ে এক নতুন দিগন্তের সম্ভাবনা তৈরি হলেও বাস্তবে গাজা কতটা শান্ত হবে, সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া