সর্বশেষ :
হামাসের শক্তি পুনর্গঠন: গাজায় যোদ্ধার সংখ্যা ফের ৪০ হাজারে, ইসরাইলি জেনারেলের মন্তব্যে উত্তাল রাজনৈতিক অঙ্গন ধানমন্ডি হত্যায় আলোড়ন: হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালনার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা রাফাল যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক অপপ্রচার: চীনের বিরুদ্ধে ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার অভিযোগ টেকসই পর্যটনের ভাবনায় কক্সবাজারে প্রথম ট্যুরিজম আর্কিটেকচার সামিট প্লট দুর্নীতির ৬ মামলায় গেজেট প্রকাশ: হাইকমান্ডে হাসিনা-রেহানা ও ১০০ আসামিকে আদালতে তলব জনপ্রতিনিধিত্বের পথে এনসিপি: নির্বাচনী মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ বিশ্বের প্রথম বায়োমেট্রিক মেটাল ক্রেডিট কার্ডের সূচনা বাংলাদেশে: যুগান্তকারী পদক্ষেপ ইবিএল ও মাস্টারকার্ডের পাঠ্যপুস্তকে নির্ভুলতা আনতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ: শিক্ষকদের কাছে চাওয়া হয়েছে লিখিত সুপারিশ এআইয়ের ফাঁদে বিভ্রান্তি: ডা. তাসনিম জারার ভাইরাল ছবি নিয়ে যা সত্য লুটপাটের প্রতিচ্ছবি: ‘জুলাই প্রিলিউড’ পোস্টারে আওয়ামী আমলের দুর্নীতি চিত্রায়িত

হামাসের শক্তি পুনর্গঠন: গাজায় যোদ্ধার সংখ্যা ফের ৪০ হাজারে, ইসরাইলি জেনারেলের মন্তব্যে উত্তাল রাজনৈতিক অঙ্গন

একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৬ জুলাই, ২০২৫
  • ০ বার
হামাসের শক্তি পুনর্গঠন: গাজায় যোদ্ধার সংখ্যা ফের ৪০ হাজারে, ইসরাইলি জেনারেলের মন্তব্যে উত্তাল রাজনৈতিক অঙ্গন

প্রকাশ: ০৬ জুলাই’ ২০২৫ । একটি বাংলাদেশ ডেস্ক । একটি বাংলাদেশ অনলাইন

গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের মাঝে এক বিস্ময়কর ও বিতর্কিত তথ্য সামনে এসেছে, যা ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)-এর সরকারি অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করেছে। ইসরাইলের অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ইয়েজহাক ব্রিকের বক্তব্য অনুযায়ী, হামাস এখন আবারও ৪০ হাজারের মতো সক্রিয় যোদ্ধা নিয়ে গাজায় যুদ্ধরত, যা যুদ্ধ শুরুর আগে সংগঠনটির সামরিক বাহিনীর আনুমানিক সদস্যসংখ্যার সমান। ব্রিকের এই মন্তব্য ইসরাইলি সামরিক কৌশল এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের কৌশলগত ব্যর্থতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

রবিবার (৬ জুলাই) ইসরাইলের প্রভাবশালী পত্রিকা মারিভ-এ প্রকাশিত এক বিশ্লেষণধর্মী মতামত নিবন্ধে ব্রিক সরাসরি আইডিএফ-এর দেওয়া তথ্যকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “হামাস কখনোই প্রথাগত কোনো সেনাবাহিনী ছিল না, তাই তাদের ‘ধ্বংস’ করার প্রশ্নই আসে না। তারা গেরিলা কৌশলে লড়াই করে, সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে হঠাৎ করে আঘাত হানে এবং এই পদ্ধতিতে তাদের সামরিক কাঠামো পুনর্গঠন করাও সহজ।” তার মতে, যুদ্ধ শুরুর পর হামাসকে ধ্বংস করার যে বার্তা ইসরাইলি নেতৃত্ব দিয়ে আসছে, তা বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে কোনোভাবেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

ব্রিকের এই বক্তব্য শুধু এক সাবেক জেনারেলের ব্যক্তিগত অভিমত নয়—তা গাজায় চলমান যুদ্ধ ও সামরিক অভিযানের প্রকৃতি ও ফলাফল নিয়ে একটি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আইডিএফ ও ইসরাইলি সরকার দাবি করে আসছে, তারা হামাসের বিপুল সংখ্যক যোদ্ধাকে হত্যা করেছে, অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংস করেছে এবং কমান্ড ও কন্ট্রোল স্ট্রাকচারকে ভেঙে দিয়েছে। এসব প্রচারণা আন্তর্জাতিকভাবে ইসরাইলের যুদ্ধ নীতিকে বৈধতা দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু ব্রিকের মতে, হামাস এখনো তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলছে এবং তাদের পুনর্গঠন করার সক্ষমতা বরং ইসরাইলের জন্য দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্রিকের বক্তব্য গাজায় যুদ্ধ পরিস্থিতির ভিন্ন এক চিত্র তুলে ধরছে। যুদ্ধ যদি সত্যিই প্রায় একবছর ধরে চলে এবং তারপরও শত্রুপক্ষ আবার আগের মতো শক্তি অর্জনে সক্ষম হয়, তবে তা শুধু হামাসের স্থিতিস্থাপকতা নয়, বরং ইসরাইলি গোয়েন্দা ও সামরিক কৌশলের দুর্বলতাও নির্দেশ করে। তাছাড়া ব্রিক যে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন, তা আন্তর্জাতিক মহলেও নতুন করে আলোচনার জন্ম দিচ্ছে—বিশেষ করে মানবাধিকার সংগঠন ও যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর দৃষ্টিতে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষে এখন পর্যন্ত ব্রিকের বক্তব্যের কোনো সরাসরি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আগেও বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, হামাসের মূল সামরিক কাঠামোকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের অপারেশন চালানোর সক্ষমতা মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে গেছে। বাস্তবে, গাজার বিভিন্ন অংশে ইসরাইলি অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে এবং হানাবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিম তীরেও।

হামাসের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের যোদ্ধার সংখ্যা বা পুনর্গঠনের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে সংঘর্ষের সময়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, তারা যুদ্ধে এখনো সক্রিয় এবং প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ না ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

ব্রিকের মতো অভিজ্ঞ নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মন্তব্য শুধু একটি সামরিক মূল্যায়ন নয়, বরং তা ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক সংকেত হিসেবেও দেখা হচ্ছে। হামাস যদি সত্যিই আবার ৪০ হাজার যোদ্ধার সমান শক্তি অর্জন করে থাকে, তবে সেটা শুধু ইসরাইলের জন্য নয়, পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যই এক নতুন সংকট তৈরি করতে পারে। সেই সঙ্গে এটি দেখিয়ে দেয়, গাজায় সংঘাতের কোনো স্থায়ী সমাধান এখনো দৃশ্যমান নয় এবং কেবল সামরিক পদক্ষেপে এই সংকটের অবসান সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।

গাজা যুদ্ধকে ঘিরে তথ্যের যে দ্বন্দ্বময় অবস্থা বিরাজ করছে, ব্রিকের মতো প্রভাবশালী সাবেক সেনা কর্মকর্তার স্পষ্ট ও খোলামেলা মতামত সেই বিভ্রান্তিকে আরও প্রকট করে তুলেছে। এখন সময় বলবে—ইসরাইল এই বাস্তবতা কতটা বিবেচনায় নেয়, এবং তাদের সামরিক ও কূটনৈতিক কৌশলে এর কী প্রভাব পড়ে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া