সর্বশেষ :
হামাসের শক্তি পুনর্গঠন: গাজায় যোদ্ধার সংখ্যা ফের ৪০ হাজারে, ইসরাইলি জেনারেলের মন্তব্যে উত্তাল রাজনৈতিক অঙ্গন ধানমন্ডি হত্যায় আলোড়ন: হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালনার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা রাফাল যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক অপপ্রচার: চীনের বিরুদ্ধে ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার অভিযোগ টেকসই পর্যটনের ভাবনায় কক্সবাজারে প্রথম ট্যুরিজম আর্কিটেকচার সামিট প্লট দুর্নীতির ৬ মামলায় গেজেট প্রকাশ: হাইকমান্ডে হাসিনা-রেহানা ও ১০০ আসামিকে আদালতে তলব জনপ্রতিনিধিত্বের পথে এনসিপি: নির্বাচনী মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ বিশ্বের প্রথম বায়োমেট্রিক মেটাল ক্রেডিট কার্ডের সূচনা বাংলাদেশে: যুগান্তকারী পদক্ষেপ ইবিএল ও মাস্টারকার্ডের পাঠ্যপুস্তকে নির্ভুলতা আনতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ: শিক্ষকদের কাছে চাওয়া হয়েছে লিখিত সুপারিশ এআইয়ের ফাঁদে বিভ্রান্তি: ডা. তাসনিম জারার ভাইরাল ছবি নিয়ে যা সত্য লুটপাটের প্রতিচ্ছবি: ‘জুলাই প্রিলিউড’ পোস্টারে আওয়ামী আমলের দুর্নীতি চিত্রায়িত

টেকসই পর্যটনের ভাবনায় কক্সবাজারে প্রথম ট্যুরিজম আর্কিটেকচার সামিট

একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৬ জুলাই, ২০২৫
  • ০ বার
টেকসই পর্যটনের ভাবনায় কক্সবাজারে প্রথম ট্যুরিজম আর্কিটেকচার সামিট

প্রকাশ: ০৬ জুলাই’ ২০২৫ । একটি বাংলাদেশ ডেস্ক | একটি বাংলাদেশ অনলাইন

পর্যটনের বিকাশে স্থাপত্যের ভূমিকা এবং উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার লক্ষ্যে কক্সবাজারে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘ডিসকোর্স বাই দ্য শোর: ট্যুরিজম আর্কিটেকচার সামিট-২০২৫’। আগামী ১১ জুলাই থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত এই আন্তর্জাতিক মানের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের প্যাঁচার দ্বীপ এলাকায় অবস্থিত পরিবেশবান্ধব ‘মারমেইড বিচ রিসোর্টে’। সম্মেলনের প্রধান তত্ত্বাবধানে রয়েছেন প্রখ্যাত স্থপতি ও আগা খান পুরস্কারপ্রাপ্ত মেরিনা তাবাসসুম।

সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য—পর্যটনভিত্তিক স্থাপত্যচর্চার মাধ্যমে কীভাবে উপকূলীয় পরিবেশকে সুরক্ষা দিয়ে টেকসই ও সংস্কৃতিনির্ভর পর্যটন গড়ে তোলা যায়, সেই বিষয়েই গভীর আলোচনা ও চিন্তাভাবনার সুযোগ সৃষ্টি করা। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত, অব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা অবকাঠামো, এবং অদূরদর্শী পরিকল্পনার কারণে কক্সবাজারের প্রাকৃতিক পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই এই সামিটকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, দেশের প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বর্তমানে অপরিকল্পিতভাবে পাঁচ শতাধিক হোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউস, কটেজ এবং কয়েক শ রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে। শহরে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে বর্ষাকালে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই অলিগলি থেকে শুরু করে সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত পানিতে ডুবে যায়। হোটেল-রেস্তোরাঁর বর্জ্য সরাসরি গিয়ে মিশছে সমুদ্র ও নদীর পানিতে, যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলের জীববৈচিত্র্য ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা। তাছাড়া পর্যটকদের জন্য নতুন ও অর্থবহ বিনোদন অভিজ্ঞতা তৈরিতেও রয়েছে বড় ঘাটতি।

এই অবস্থায়, ‘ডিসকোর্স বাই দ্য শোর’ শীর্ষক এই সম্মেলনে আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরা হবে কীভাবে স্থাপত্যচর্চার মধ্যে দিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা যায়, সেই সঙ্গে কক্সবাজারের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যকে সম্মান জানিয়ে পর্যটন শিল্পকে টেকসই পথে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।

সম্মেলনের প্রথম দিন শুরু হবে একটি প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে, যার শিরোনাম ‘ইকো ট্যুরিজম এবং স্থাপত্যচর্চায় টেকসইতা’। আলোচনায় অংশ নেবেন মেরিনা তাবাসসুম, খোন্দকার হাসিবুল কবির ও স্থপতি এহসান খান। দিনব্যাপী বিভিন্ন স্থপতি তাঁদের নিজস্ব প্রকল্প ও ধারণা তুলে ধরবেন উপস্থাপনার মাধ্যমে। প্রথম দিনের কার্যক্রমের শেষাংশে একটি গাইডেড সানসেট মেডিটেশনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশে বসেই নকশা তৈরির আয়োজন করা হবে।

দ্বিতীয় দিনে আরও ১০ জন স্থপতি দুটি পৃথক সেশনে তাঁদের পর্যবেক্ষণ ও ধারণা উপস্থাপন করবেন। এদের মধ্যে কেউ উপকূলীয় প্রতিরোধ সক্ষম স্থাপত্য নিয়ে কাজ করছেন, আবার কেউ স্থানীয় সংস্কৃতির ভিত্তিতে টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নের চিন্তা তুলে ধরবেন। দিনটির শেষ পর্বে অনুষ্ঠিত হবে ওপেন ফ্লোর প্যানেল আলোচনা, যেখানে উপস্থিত থাকবেন স্থপতি মাহমুদুল আনওয়ার রিয়াদ ও নাহাস খলিল। সম্মেলনের শেষাংশে সার্বিক প্রতিফলন তুলে ধরে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করবেন মেরিনা তাবাসসুম।

সম্মেলনের আয়োজন করছে মারমেইড বিচ রিসোর্ট। তাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল হক চৌধুরী বলেন, “কক্সবাজার এখনো একটি বিকাশমান অঞ্চল, যেখানে সময়োপযোগী, পরিবেশসম্মত উন্নয়ন ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। এই সম্মেলনের মাধ্যমে কক্সবাজারের ভবিষ্যৎ পর্যটন ও স্থাপত্য পরিকল্পনার ভিত্তি আরও শক্ত হবে। দেশি ও আন্তর্জাতিক স্থপতিরা উপকূলীয় টেকসই উন্নয়ন নিয়ে যে দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করবেন, তা জাতীয় নীতিনির্ধারকদের জন্যও দিকনির্দেশক হয়ে উঠবে।”

এই সম্মেলন শুধু স্থপতি ও পরিকল্পনাবিদদের মিলনমেলাই নয়, বরং ভবিষ্যতের কক্সবাজার গড়ার রূপরেখা তৈরির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। এখান থেকেই উন্মোচিত হতে পারে একটি নতুন ধারা—যেখানে পর্যটন মানে হবে কেবল ভ্রমণ নয়, বরং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণের এক সম্মিলিত প্রয়াস।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া