প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫ । একটি বাংলাদেশ ডেস্ক । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
বর্তমান শাসনামলের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও লাগামহীন দুর্নীতিকে “আওয়ামী লীগ আমলের একটি বড় নিদর্শন” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। রোববার (০৬ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি এ বক্তব্য তুলে ধরেন।
পোস্টটিতে তিনি উল্লেখ করেন, বিশিষ্ট শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তী ‘জুলাই প্রিলিউড’ সিরিজের ৫ থেকে ৮ নম্বর পোস্টার এঁকেছেন এই দুর্নীতির থিমকে ঘিরে। এই পোস্টারগুলোতে পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কীভাবে দুর্নীতি একটি নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর মধ্য দিয়ে বিস্তার লাভ করেছে এবং তা জাতীয় জীবনের প্রতিটি স্তরে ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে।
উপদেষ্টা আসিফ তার পোস্টে বলেন, “আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নাই। আমি আসছি মানুষকে দিতে”— শেখ হাসিনার মুখে এমন কথার ফুলঝুরি শোনা গেলেও বাস্তবতা ছিল একেবারে ভিন্ন। আজ সেই আসল চিত্রটি উন্মোচিত হচ্ছে ধাপে ধাপে, প্রতিটি স্তরে, প্রতিটি খাতে। তিনি আরও বলেন, এই লুটপাটের ভয়াবহতা ছিল এমন পর্যায়ে, যা বিশ্বাস করা কঠিন হলেও বাস্তবতার নির্মম চিত্র হয়ে সামনে আসছে।
তিনি জানান, শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তী শুরুতে ‘জুলাই প্রিলিউড’ সিরিজের জন্য দশটি পোস্টার তৈরি করলেও, জনসাধারণের আগ্রহ ও চাহিদার কারণে তিনি আরও পোস্টার ডিজাইনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পোস্টারগুলোতে কেবল দুর্নীতিরই প্রতিফলন নয়, বরং ‘জুলাই কেন অনিবার্য হয়ে উঠেছিল’ এবং সেই মাসে কী ঘটেছিল, তার চিত্রও সংক্ষিপ্ত ও শৈল্পিক উপায়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।
শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তী সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ‘জুলাই কোমেমোরেশন প্রোগ্রাম’-এর অংশ হিসেবে এসব পোস্টার ডিজাইন করছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, “জুলাই প্রিলিউড” নামের এই পোস্টার সিরিজটিকে ঘিরে ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে। এতে শাসকগোষ্ঠীর গোপন কর্মকাণ্ড, রাষ্ট্রের সম্পদ আত্মসাৎ এবং সরকারি অনিয়মের ইঙ্গিত প্রকাশ পেয়েছে রূপক ও বিমূর্ত শিল্পকলার মধ্য দিয়ে।
এই পোস্টারগুলো শুধু শিল্পচর্চার মাধ্যমই নয়, বরং একটি সময়কে স্মরণ এবং প্রতিরোধের বার্তা বহন করে বলেও মন্তব্য করছেন বিশ্লেষকরা। এই লুটপাটের চিত্র তুলে ধরতে ‘জুলাই প্রিলিউড’ এখন এক ধরণের ভিজ্যুয়াল নথিপত্রে রূপ নিচ্ছে, যা বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা বোঝাতে এক নতুন মাত্রা যোগ করছে।
সূত্র হিসেবে পোস্টের শেষে ‘বাসস’-এর নাম উল্লিখিত থাকলেও, বিষয়বস্তুর গভীরতা এবং তাতে নিহিত বার্তা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত করে দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট, দুর্নীতির চক্র এবং একটি নৈতিক বিপর্যয়ের ভয়াবহ চিত্র।