প্রকাশ: ০৬ জুলাই’ ২০২৫ । একটি বাংলাদেশ ডেস্ক | একটি বাংলাদেশ অনলাইন
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি প্লট বরাদ্দের সময় শেখ হাসিনা, তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ও অন্যান্য জনপ্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগে ছয়টি পৃথক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এতে মোট ১০০ জনকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই গেজেট ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক জাকির হোসেন গালিবের আদেশে ৩ জুলাই বাংলাদেশ সরকারী মুদ্রণালয়ে ছাপা হয় ।
এসব মামলায় জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট আসামিরা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরেও আত্মগোপনে রয়েছে। হাজিরার জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, ১৯৫৮ সালের ক্রিমিনাল আইন সংশোধনী ৬(১৩) ধারা অনুযায়ী, নিয়মিত আদালতে উপস্থিত না হলে অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে । মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানি আগামী ২০ জুলাই ধার্য হয়েছে ।
দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলায় গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ২০ জুলাই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। কোন আসামি না এলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হবে।”
গেজেটে বলা হয়েছে, মামলাগুলোতে হাইকমান্ডের টার্গেট নেই; বরং দুর্নীতির ক্ষমতা ও সম্পদের অপব্যবহার সংক্রান্ত ধারাগুলো প্রয়োগ করা হচ্ছে। ছয়টি মামলায় অভিযোগের ধরন মিল রয়েছে—এগুলো ১২–১৪ জানুয়ারির মধ্যে দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ও এসএম রাশেদুল হাসান দায়ের করেছিলেন। দায়েরের পর ১০ মার্চ তদন্ত শেষ করে চার্জশিট দাখিল করা হয় ।
প্রথম চার্জশিটে ১৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনাসহ আটজনকে আসামি করা হয়। এছাড়াও ট্রানজেকশনের ধারাবাহিকতায় একই দিন বা তার পরের দফা অনুযায়ী বিভিন্ন অভিযোগ ও চার্জশিটে মোট আসামির সংখ্যা বেড়ে প্রায় শতাধিকে দাঁড়িয়েছে ।
এই গেজেট এবং গ্রেফতারি পরোয়ানার জারি—অলৌকিক বা সীমিত উদ্দেশ্য নয়, বরং রাষ্ট্রযন্ত্রের আইনি ব্যবস্থায় আসামিদের সামনে গণ্যমান্যভাবে হাজিরার আহ্বান। ২০ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য শুনানিতে যদি তাঁরা না উপস্থিত হন, তবে ছুটি ভেঙেই মামলা এগিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থায় এই ঘটনা যেমন একটি দৃষ্টান্ত, তেমনি একটি বড় প্রশ্নও তুলে দেয়—আগামীতে আইন ও বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা রক্ষায় যথাযথতা ও দায়িত্ববোধ কতটুকু বজায় থাকবে।