প্রকাশ: ১৭ জুন, ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে সাম্প্রতিককালে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে হোয়াইট হাউস পারমাণবিক চুক্তি পুনর্বিবেচনা এবং যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য ইরানের সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রশাসন পারস্পরিক বিরোধের অবসান এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণে মনোনিবেশ করছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির মধ্যে এই সপ্তাহে একটি সম্ভাব্য বৈঠকের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হবে নতুন পারমাণবিক চুক্তি প্রণয়ন এবং ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান যুদ্ধে বিরতি আনার জন্য কূটনৈতিক পথ খোঁজা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস নিউজ চারটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানি কর্মকর্তাদের সাথে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছেন, যা উত্তেজনাময় এই পরিস্থিতিতে সংকট প্রশমনে ভূমিকা রাখতে পারে।
অন্যদিকে, সিএনএন এক মার্কিন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানায় যে, যদিও এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়নি, তবে ইরান ও ইসরাইল দুই পক্ষই কিছুটা সঠিক পথে এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলন থেকে ফিরে আসার পর ওয়াশিংটন ডিসিতে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মার্কিন গণমাধ্যমের ধারণা, এই বৈঠকে বর্তমান উত্তেজনার পরিস্থিতি মূল্যায়ন ও পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হবে।
এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘর্ষের তীব্রতা কমাতে এবং পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তারের সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে নাজুক অবস্থা বজায় থাকায় এই ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ঐ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। হোয়াইট হাউসের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে পারমাণবিক সমঝোতা পুনঃস্থাপনে নতুন পথ তৈরি করতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সর্বোপরি, ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও উত্তেজনার মধ্যেও এই ধরনের কূটনৈতিক সংলাপের সম্ভাবনা একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে আলোচনার ফলাফল ও তার বাস্তবায়ন কেমন হবে, সেটি সময়ের বিবেচ্য বিষয়। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের শান্তিপ্রিয় সকল দেশের জন্য গুরুত্ব বহন করে, কারণ মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা গ্লোবাল নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।