সর্বশেষ :
অবৈধ সরকারের প্রলোভনে এমপি হয়েছেন সাকিব’: আমিনুল হকের কঠোর মন্তব্য নার্সদের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু ইরান সাক্ষাতের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও পরিদর্শনের অনুমতি দিচ্ছে না’: ট্রাম্প পঞ্চাশেরও অধিক মানুষকে সামনে গুলিতে নিহত হতে দেখেছি” — আলী আহসান জুনায়েদ জুলাই বিপ্লবকে কটাক্ষ করে ফেসবুক পোস্ট—কনস্টেবল রনি সাময়িক বরখাস্ত আমরা দিই, নেই না”—চাঁদা বিতর্কে মুফতি ফয়জুল করিমের সোজাসাপ্টা জবাব গাজায় নিজেদের গুলিতে নিহত ৩১ সেনা: ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দুর্বল সমন্বয় প্রশ্নবিদ্ধ বরিশালে সাংবাদিকের নামে মামলা: স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধা দিতে চেষ্টা নিন্দাজনক নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ ঝড়ের গতিতে অভিষেক ফিফটি পেলেন পারভেজ হোসেন ইমন

উন্নয়ন প্রকল্পে ৪৬ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি রোধ: ড. ইউনূস সরকারের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে দেশের অর্থনীতির স্থিতি ফেরাতে প্রশংসনীয় সাফল্য

একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫
  • ৬৬ বার

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫ । একটি বাংলাদেশ ডেস্ক । একটি বাংলাদেশ অনলাইন

ইন্টারিম সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও রাষ্ট্রীয় অর্থের অপব্যবহার রোধে বেশ কয়েকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের অন্যতম ফলশ্রুতি হিসেবে সরকার প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা মূল্যের অপ্রয়োজনীয় বা অস্বচ্ছ উন্নয়ন ব্যয় রোধ করতে সক্ষম হয়েছে, যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন—বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন সফলতা। অথচ, গণমাধ্যমে এ বিষয়ে খুব কম আলোচনা হয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই অর্থনীতিবিদ, প্রকৌশলী ও প্রশাসনিক দক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ দল দেশের চলমান ও ভবিষ্যৎ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর পুনঃমূল্যায়ন শুরু করে। লক্ষ্য ছিল—যেসব প্রকল্পে বাজেট অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত ধরা হয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে বাস্তবসম্মত খরচ নির্ধারণ করা এবং অতিরিক্ত ব্যয় রোধ করা। এতে দেশের রিজার্ভে চাপ না দিয়ে, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকেই ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ খাতে বকেয়া পরিশোধ ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব হয়।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিবের বরাত দিয়ে জানা যায়, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগে ১০ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা, সেতু বিভাগে ৭ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ৮ হাজার ৩৬ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগে ৭ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার ব্যয় সংকোচন করা হয়েছে। এসব মিলিয়ে মোট ব্যয় সংকোচনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৬ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা, যা পূর্বে সম্ভাব্য দুর্নীতির আশঙ্কায় ছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, এই অর্থ ব্যবস্থাপনার সুফল তাৎক্ষণিকভাবে দেশের জ্বালানি খাতে দেখা যায়। যেখানে পূর্ববর্তী সরকারের সময় হাজার হাজার কোটি টাকার আন্তর্জাতিক বকেয়া জমে গিয়েছিল, সেখানে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সাত মাসের মধ্যেই সেইসব বকেয়া পরিশোধ করে ফেলে। বর্তমানে বাংলাদেশের কোনো আন্তর্জাতিক জ্বালানি সরবরাহকারীর কাছে পাওনা নেই।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সরকারের এ ব্যয় সংকোচনের উদ্যোগ কোনো আন্তর্জাতিক ঋণ বা বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভর করে সম্পন্ন হয়নি। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার অভ্যন্তরীণ খরচ কমিয়ে এবং বাজেট পুনঃমূল্যায়নের মাধ্যমে ২৪২ কোটি ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করে অর্থনীতিকে চাপমুক্ত রাখে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রশাসনিক দক্ষতা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের প্রতি উচ্চ পর্যায়ের দায়বদ্ধতা ভবিষ্যৎ সরকারগুলোর জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করবে। ব্যাংক খাতেও সরকারের এই দক্ষ হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা গেছে। ইন্টারিম সরকারের শুরুতে ইসলামি ব্যাংক বাদে অনেক বাণিজ্যিক ব্যাংক তারল্য সংকটে পড়ার সম্ভাবনায় ছিল। কিন্তু সমন্বিত ব্যবস্থাপনায় তা থেকে উত্তরণ ঘটে এবং কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়নি। এমনকি ইসলামি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১ হাজার ১১৩ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ সত্ত্বেও, ব্যাংকিং কার্যক্রম প্রায় স্বাভাবিকই ছিল।

সরকারের সর্বশেষ একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হচ্ছে, উন্নয়ন প্রকল্পের আগে জনমত নেওয়ার বাধ্যবাধকতা। ২০২৪ সালের অক্টোবরে জারি করা এক পরিপত্রে বলা হয়, যেকোনো প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। এরপর ন্যূনতম দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে জনগণের কাছ থেকে মতামত নিতে হবে। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, প্রকল্পের যৌক্তিকতা, প্রভাব বিশ্লেষণ ইত্যাদি তথ্যও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

সুশাসন ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির এই প্রয়াসকে অনেকেই স্বাগত জানাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে দুর্নীতির সুযোগ কমে আসবে, প্রকল্প ব্যয় নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং জনগণের অংশগ্রহণে প্রকল্পগুলো আরও টেকসই ও কার্যকর হবে।

অনেক বিশ্লেষকের মতে, গত পাঁচ দশকে ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, তার সুফল আজ বাংলাদেশ পাচ্ছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় তার দূরদৃষ্টি ও কৌশলগত দক্ষতা বাংলাদেশকে সংকট থেকে উত্তরণের পথে দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছে।

সুশীল সমাজের অনেকে মনে করছেন, অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়া একটি দেশকে ধ্বংস থেকে রক্ষা করতে তার ভূমিকা ভবিষ্যতে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করা হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি রোধে ড. ইউনূস সরকার যেভাবে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে, তা বাংলাদেশে নতুন একটি প্রশাসনিক সংস্কৃতির সূচনা করেছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া