প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫ | নিজস্ব সংবাদদাতা | একটি বাংলাদেশ অনলাইন
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। দেশব্যাপী একযোগে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, যারা দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। পাশাপাশি বিভিন্ন অভিযোগে আরও কয়েক শতাধিক ব্যক্তি পুলিশের জালে ধরা পড়েছে।
শনিবার (৫ জুলাই) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি), মিডিয়া ও জনসংযোগ শাখার ইনামুল হক সাগর।
তিনি জানান, শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে যেসব আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১ হাজার ১০৯ জনের বিরুদ্ধে আগে থেকেই মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। এই সকল আসামিদের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, মাদক, সন্ত্রাস, রাজনৈতিক সহিংসতা ও জালিয়াতিসহ নানা অপরাধে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য অভিযোগে আরও ৪৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে নজরদারিতে ছিলেন।
শুধু গ্রেপ্তার নয়, অভিযানে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানে একটি এসএমজি (সাবমেশিন গান), একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ৬১ রাউন্ড রাইফেলের গুলি এবং ৮ রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অস্ত্র কোথা থেকে এসেছে এবং কী উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো—তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আরও জানানো হয়েছে, সম্প্রতি দেশে নানা অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এই বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা ও থানা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন এআইজি ইনামুল হক সাগর।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের একযোগে অভিযান শুধুমাত্র অপরাধ দমনেই সহায়ক নয়, বরং এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ও সক্রিয়তার প্রতীক। বিশেষ করে মামলাভুক্ত ও পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার কার্যক্রম আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি জনআস্থাকে দৃঢ় করে।
এই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন পুলিশের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও মানবিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া প্রতিটি ব্যক্তির আইনগত অধিকার ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করারও দাবিও তোলা হয়েছে।
অপরদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—এই অভিযানে কোনো ধরনের বেআইনি হস্তক্ষেপ, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ বা হয়রানির অভিযোগ পেলে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশব্যাপী এমন অভিযান ও তৎপরতা অব্যাহত থাকলে অপরাধ দমন ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।