প্রকাশ: ২৭শে জুন’ ২০২৫ । একটি বাংলাদেশ ডেস্ক । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতায় যখন বিশ্বের দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধক্ষেত্রে, তখন সেই উত্তপ্ত অঞ্চল থেকে রুদ্ধশ্বাস সড়কযাত্রায় পাকিস্তানে এসে পৌঁছেছেন বাংলাদেশি নাগরিকদের একটি দল। যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ইরানে আটকে পড়া ২৮ জন বাংলাদেশি সড়কপথে দেশটি ত্যাগ করে এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পাকিস্তান সরকার এই দলটির নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করছে। বর্তমানে তারা করাচির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন এবং শিগগিরই সেখান থেকে বিমানযোগে দেশে ফিরবেন বলে জানানো হয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী ও মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, বর্তমানে ইরানে অবস্থানরত আরও অনেক বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন, যারা পরিস্থিতি অনুযায়ী দেশে ফিরতে ইচ্ছুক। তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য তেহরানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দূতাবাস নিয়মিতভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে সাহায্য করার জন্য দুটি হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে, যা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৩ জুন থেকেই কার্যকর রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি ক্রমবর্ধমান প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে। যেসব নাগরিক ইরানে অবস্থান করছেন এবং দেশে ফিরতে চান, তাদের পর্যায়ক্রমে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব মিশন ও রাষ্ট্রীয় সংস্থা এই কার্যক্রমে সমন্বিতভাবে অংশ নিচ্ছে।
তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরপরই অনেক বাংলাদেশি এখন ফিরতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলে জানানো হয়েছে। অনেকে সেখানে ব্যবসা, শিক্ষা বা পেশাগত কারণে অবস্থান করছেন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে চান।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের সংকটকালে সরকারের তড়িৎ পদক্ষেপ প্রবাসীদের মাঝে আস্থা বাড়ায় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সক্ষমতাকেও দৃঢ়ভাবে তুলে ধরে। একই সঙ্গে এটি প্রমাণ করে, বৈশ্বিক অস্থিরতার সময় দেশের নাগরিকদের সুরক্ষায় সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে প্রস্তুত।
এই প্রত্যাবাসন শুধু নিছক একটি যাতায়াত নয়, বরং এটি প্রবাসী নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ববোধের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। আগামীতেও এমন সংকটপূর্ণ সময়ে রাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে, এমন প্রত্যাশা করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।