সর্বশেষ :
ভারত না এলে বড় আর্থিক সংকটে পড়বে বিসিবি ভোট বিক্রি করলেই পাঁচ বছর নির্যাতনের শিকার হবেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনেই প্রকাশ পাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা: রিজভী চট্টগ্রামে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত তিন আবুধাবিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর কপাল খুললো: লটারি জিতলেন ৭৫ কোটি টাকা কোচ কাবরেরার পদত্যাগ চাওয়ায় বাফুফের কমিটি থেকে বাদ শাহীন ‘আমাদের কী পাপ’: ত্রাণ আনতে গিয়ে ভাইকে হারানো গাজাবাসী শিশুর হৃদয়বিদারক আহ্বান ভাঙনের গল্পে আত্মজয়: তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি মিথিলা মসজিদের মাইকে ঘোষণা, প্রকাশ্যে পিটিয়ে মা ও দুই সন্তানকে হত্যা: ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও মামলা হয়নি আফগান সীমান্তে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: ‘ভারত-সমর্থিত’ ৩০ সন্ত্রাসী নিহতের দাবি পাকিস্তানের

গোপন ছায়াযুদ্ধের পর্দা উন্মোচিত: নারীবেশে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা অনুপ্রবেশে চমকপ্রদ বিস্ফোরণ

একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫
  • ৩৩ বার

প্রকাশ: ১৭ই জুন ২০২৫ | একটি বাংলাদেশ ডেস্ক

ইরানের নিরাপত্তা মহলে এক অভূতপূর্ব গুপ্তচর কেলেঙ্কারির বিস্তারিত তথ্য উন্মোচিত হয়েছে, যেখানে একজন ফরাসি নাগরিকের ইসলামী মুখোশের আড়ালে চলেছে মোসাদের সূক্ষ্ম কিন্তু মারাত্মক গোয়েন্দা তৎপরতা। ক্যাথরিন পেরেজ শকদাম নামের এই নারী গত কয়েক বছর ধরে ইরানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসীন মহলে প্রবেশাধিকার লাভ করেছিলেন, যা শেষ পর্যন্ত দেশটির জন্য একটি বড় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পরিণত হয়।

ক্যাথরিনের গল্পটি শুরু হয়েছিল একজন ধর্মান্তরিত শিয়া মুসলিম হিসেবে। তিনি ইসলাম গ্রহণ করে ইরানি বিপ্লব ও “বিলায়াতে ফকিহ” ধারণার পক্ষে লেখালেখি শুরু করেন, এমনকি তার কিছু লেখা সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেইয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়েছিল। এই পরিচয়ের আড়ালে তিনি ইরানের রাজনৈতিক, সামরিক ও বুদ্ধিজীবী মহলে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেন।

তাঁর গুপ্তচরবৃত্তির পদ্ধতি ছিল অনন্য। একজন স্বনামধন্য লেখিকা ও গবেষক হিসেবে তিনি ইরানের সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রবেশাধিকার পেয়েছিলেন। কিন্তু তার আসল সাফল্য ছিল ইরানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে গড়ে তোলা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। নারী মহলের এই আড্ডা-আলোচনায় স্বামীদের দৈনন্দিন রুটিন, ভ্রমণ পরিকল্পনা, এমনকি কর্মস্থলের গোপন তথ্যও অনায়াসে উঠে আসত।

ইরানের গোয়েন্দা সংস্থার এক উচ্চপদস্থ সূত্র জানায়, “এই নারী তার গবেষণার অজুহাতে ইরানের কৌশলগত স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু তার আসল কাজ ছিল নারীদের আস্থা অর্জন করে গোপন তথ্য সংগ্রহ করা। তিনি এমনভাবে কাজ করতেন যে, স্ত্রীরা বুঝতেই পারেননি তারা নিজেরাই স্বামীদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছেন।”

এই সংগৃহীত তথ্যগুলো রিয়েল টাইমে মোসাদের কাছে পৌঁছে যেত। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কয়েকটি সুনির্দিষ্ট টার্গেটেড অপারেশনের পেছনে এই তথ্যই কাজ করেছে। যখন ইরানি কর্তৃপক্ষ তার কার্যক্রম সম্পর্কে সন্দিহান হয়, ততক্ষণে ক্যাথরিন দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. ফারহানা ইসলাম বলেন, “এটি শুধু একটি গুপ্তচর কাহিনি নয়, বরং আধুনিক গোয়েন্দা যুদ্ধের একটি নতুন মাত্রা। যেখানে নারীদের নিষ্পাপ আড্ডাকে অস্ত্রে পরিণত করা হয়েছে।”

এই ঘটনা আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা মহলে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, ইরানের মতো কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থায় একজন বিদেশি নারী কীভাবে এতটা প্রবেশাধিকার পেলেন? আবার কেউ কেউ বলছেন, এটি আসলে আধুনিক গুপ্তচরবৃত্তির একটি নতুন মডেল, যেখানে নারীদের সামাজিক সম্পর্ককে কাজে লাগানো হয়।

ইরানের কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে এবং বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, শুধু ইরান নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এই ধরনের গুপ্তচর তৎপরতা চলতে পারে।

এই ঘটনা বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা বয়ে এনেছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, বিশেষ করে যখন তারা সংবেদনশীল তথ্য জানার আগ্রহ দেখায়।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে “আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন” বলে আখ্যায়িত করেছে এবং জাতিসংঘে বিষয়টি উত্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল ও ফ্রান্স এই অভিযোগকে “অমূলক” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

এই প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করতে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম, গোয়েন্দা সূত্র এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতামত বিবেচনা করা হয়েছে। এটি একটি নিরপেক্ষ ও পেশাদার সংবাদ উপস্থাপনার অংশ হিসেবে প্রকাশিত হলো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া