প্রকাশ: ০৪ জুলাই ‘২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
দেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে বিএনপির আসল জনপ্রিয়তা প্রমাণিত হবে—এমন দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার (৪ জুলাই) ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, টানা ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশে একদলীয় দমনমূলক শাসন চলছে। আর সেই স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে বিএনপি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যে গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছিল, বিএনপি তা পুনরুজ্জীবিত করার সংগ্রামে কখনো পিছপা হয়নি।
তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলছি—এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না। বরং একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই প্রকৃত গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্ভব। আর সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়েই স্পষ্ট হবে বিএনপি আসলে কতটা জনপ্রিয় ও জনআস্থার প্রতীক।”
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আরও বলেন, “গণতন্ত্র মানে শুধু ভোট নয়, বরং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মতপার্থক্যের সহনশীলতা এবং সুশাসনের গ্যারান্টি। বেগম খালেদা জিয়া সবসময়ই গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি কখনো কারও ভিন্নমতকে দমন করেননি বরং পরমত সহিষ্ণুতার আদর্শে বিশ্বাস রেখেছেন। তার হাত ধরেই এদেশে গণতন্ত্র বারবার ফিরেছে।”
দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে রিজভী বলেন, “বিএনপি কোনো অপরাধ বা অনৈতিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত কাউকে প্রশ্রয় দেয় না। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাস করি। দলের কেউ যদি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি জানান, ইতোমধ্যে সারা দেশে কয়েকজন নেতাকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং এসব সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। সরকার যতই বাধা দিক না কেন, যতই দমন-পীড়ন হোক, জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আমরা সামনে এগিয়ে যাবো। আমাদের দাবি একটাই—তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন।”
রিজভীর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিএনপি আবারও স্পষ্ট করেছে যে, তারা ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো পেছনের দরজার পথ খুঁজছে না, বরং জনগণের রায়েই নিজেদের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করতে চায়। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম করতে হলে সবপক্ষকেই সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজতে হবে।
এই জরুরি সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিএনপি আবারও নির্বাচনকে ঘিরে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ও নীতি স্পষ্ট করেছে। আগামী দিনে এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।