সর্বশেষ :
দেশের উন্নয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: ড. এনামুল হক অবৈধ সরকারের প্রলোভনে এমপি হয়েছেন সাকিব’: আমিনুল হকের কঠোর মন্তব্য নার্সদের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু ইরান সাক্ষাতের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও পরিদর্শনের অনুমতি দিচ্ছে না’: ট্রাম্প পঞ্চাশেরও অধিক মানুষকে সামনে গুলিতে নিহত হতে দেখেছি” — আলী আহসান জুনায়েদ জুলাই বিপ্লবকে কটাক্ষ করে ফেসবুক পোস্ট—কনস্টেবল রনি সাময়িক বরখাস্ত আমরা দিই, নেই না”—চাঁদা বিতর্কে মুফতি ফয়জুল করিমের সোজাসাপ্টা জবাব গাজায় নিজেদের গুলিতে নিহত ৩১ সেনা: ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দুর্বল সমন্বয় প্রশ্নবিদ্ধ বরিশালে সাংবাদিকের নামে মামলা: স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধা দিতে চেষ্টা নিন্দাজনক নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ

ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ইরানকে ‘শর্তহীন আত্মসমর্পণ’-এর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি

একটি বাংলাদেশ অনলাইন
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫
  • ৭ বার
ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ইরানকে ‘শর্তহীন আত্মসমর্পণ’-এর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি

প্রকাশ: ১৮ জুন, ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ যখন ক্রমেই চড়ছে, তখন ইরানকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে নতুন করে আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রে এসেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ একাধিক পোস্টে ট্রাম্প জানান, ইরানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্য এখন প্রায় শেষের পথে। এরপর আরেকটি পোস্টে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ!”—এই বার্তাটিই এখন আমেরিকার চূড়ান্ত অবস্থান।

ট্রাম্প আরও বলেন, “আমরা জানি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী কোথায় লুকিয়ে আছেন। তিনি আমাদের জন্য একেবারে সহজ লক্ষ্যবস্তু। তবে তাকে এখনই হত্যার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই।” সেই সঙ্গে তিনি নিশ্চিত করেছেন, “সাধারণ মানুষের ওপর কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হবে না।”

যদিও ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘাতে না জড়ানোর কথাই বরাবর বলেছে ওয়াশিংটন, তবে বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে ইরান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নতুন করে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে, পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে ব্যাপকভাবে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন মার্কিন সেনার সংখ্যা ৪০ হাজারের কাছাকাছি, যা পূর্বের তুলনায় প্রায় ১০ হাজার বেশি।

এই দ্বিমুখী কৌশলের মধ্যেই ইরানকে কঠোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে—পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ না করলে এবং শর্তহীন আত্মসমর্পণে সম্মত না হলে তাদের জন্য ভবিষ্যৎ ভয়াবহ হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য—ইরানের শাসনব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা। বিশেষ করে ফারস উপসাগরীয় অঞ্চলে ইরান যতটা প্রভাব বিস্তার করেছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনাই এখন ওয়াশিংটনের অন্যতম অগ্রাধিকার।

তবে কূটনীতির পথ এখনো পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য আলোচনা নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা চলছে। হোয়াইট হাউসে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদন অনুসারে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাইছেন আলোচনায় অংশ নিতে উইটকফ অথবা ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে পাঠাতে।

পরিস্থিতির উত্তেজনা কতটা তা বোঝা যায় ট্রাম্পের কানাডা সফরের আচমকা সমাপ্তি থেকেও। জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন শেষ হওয়ার আগেই তিনি দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান এবং দেশে ফিরেই ৯৫ লাখ ইরানবাসীকে তাদের নিরাপত্তার জন্য তেহরান ত্যাগ করার পরামর্শ দেন।

এ ধরনের উত্তপ্ত বার্তা, যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন এবং সমান্তরাল কূটনৈতিক উদ্যোগ স্পষ্ট করে যে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক ইস্যুতে চূড়ান্ত এক সিদ্ধান্তের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। যদিও যুদ্ধ এড়াতে আলোচনার পথ খোলা রয়েছে, তবুও এখন ট্রাম্পের কঠোর বার্তা মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিকে এক নতুন মোড়ে নিয়ে যেতে পারে। এটি হতে পারে তার শেষ কূটনৈতিক প্রয়াস—নাকি ভবিষ্যতের যুদ্ধের প্রাক-মঞ্চায়ন, সে প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া