প্রকাশ: ২৫ জুন, ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
ওজন কমানোর কথা ভাবলেই অনেকের প্রথম পদক্ষেপ হয় খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া বা একেবারে উপোস থাকা। তবে পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের মতে, এই পথ একেবারেই সঠিক নয়। না খেয়ে থাকা শুধু যে শরীরের জন্য ক্ষতিকর তা-ই নয়, বরং এটি দীর্ঘমেয়াদে বিপরীত ফল বয়ে আনতে পারে। শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে, কমে যেতে পারে শক্তি, আর দেখা দিতে পারে নানা শারীরিক জটিলতা। তাই ওজন কমাতে হলে চাই নিয়মিত, পরিমিত ও সঠিক খাবার গ্রহণ।
খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন এমন কিছু উপাদান খাওয়ার জন্য যা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী এবং ওজন কমাতে সহায়ক। বিশেষ করে যেসব খাবারে ক্যালোরি কম, কিন্তু পুষ্টিমান ও ফাইবার বেশি—এমন খাবার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। তেল-মশলাযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত ভাজাভুজি এবং বাইরে থেকে কেনা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। এসব খাবার শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমায় এবং বিপাকক্রিয়া ব্যাহত করে।
সবুজ শাকসবজি হলো ওজন কমানোর ডায়েটে সবচেয়ে কার্যকর এক উপাদান। পালং শাক, লাল শাক, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন শাকসবজি ফাইবারে ভরপুর এবং এতে ক্যালোরিও থাকে খুব কম। এই ধরনের খাবার হজমে সাহায্য করে, দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং বাড়তি খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। ফলে ওজন কমানো অনেক সহজ হয়।
ডিমও একটি চমৎকার পুষ্টিকর খাবার যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এতে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন এবং উপকারী ফ্যাট থাকে, যা শরীরকে দীর্ঘ সময় পরিপূর্ণ রাখে ও অপ্রয়োজনীয় ক্ষুধা কমায়। বিশেষ করে সকালে একটি সেদ্ধ বা পোচ ডিম খেলে সারাদিন শরীরে শক্তি থাকে এবং অতিরিক্ত খাবারের প্রয়োজন পড়ে না।
ফ্যাটযুক্ত মাছ যেমন সালমন, টুনা বা ম্যাকারেল, এগুলোতে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও উচ্চমাত্রার প্রোটিন। এসব উপাদান শরীরের বিপাকহারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, প্রদাহ কমায় এবং পেশি গঠনে সহায়তা করে। অনেকেই মনে করেন ফ্যাটযুক্ত মাছ খেলে ওজন বাড়বে, কিন্তু বাস্তবে এই মাছগুলোতে থাকা উপকারী ফ্যাট শরীরের চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে এবং এটি ওজন হ্রাসে ভূমিকা রাখে।
অতএব, ওজন কমাতে গেলে না খেয়ে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই বরং বিজ্ঞানসম্মত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা সবচেয়ে জরুরি। সঠিক সময়ে সঠিক খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করাই হচ্ছে ওজন কমানোর স্বাস্থ্যসম্মত এবং টেকসই উপায়। এসব উপকারী খাবারকে ডায়েটে নিয়মিতভাবে অন্তর্ভুক্ত করলে সহজেই, নিরাপদে ও কার্যকরভাবে ওজন কমানো সম্ভব হবে।