প্রকাশ: ৩০শে জুন ২০২৫ ।একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
একটি বাংলাদেশ অনলাইন

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের যুব শাখা স্থানীয় পর্যায়ে মানবিক ও সামাজিক সহায়তা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নে দুইটি অসচ্ছল পরিবারকে সেলাই মেশিন এবং একটি পরিবারকে নগদ অর্থ প্রদান করেছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে এই সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যা এলাকায় সামাজিকভাবে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

রোববার বিকেলে মুন্সীরহাট ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই সহায়তা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুন্সীরহাট ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা জাফর আহমেদ, সেক্রেটারি শাখাওয়াত হোসেন শামীম, যুব বিভাগের সেক্রেটারি ইসরাফিল হোসেন, যুব নেতা ইফতেখার উদ্দিন মেশকাত, ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি মাষ্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, স্থানীয় জামায়াত নেতা মাস্টার আইউব আহমেদ, শরীফ মোহাম্মদ ইয়াকুব এবং জাকির হোসেনসহ আরও অনেকে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, জামায়াতে ইসলামী কেবল রাজনৈতিক সংগঠন নয়, বরং এটি একটি সমাজসচেতন ও দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং সংকটময় মুহূর্তে সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেওয়া এ দলের অন্যতম দায়িত্ব। তারা জানান, এই ইউনিয়নের তিনটি পরিবার সম্প্রতি অর্থনৈতিক সংকটে পড়লে, স্থানীয় জামায়াত নেতৃবৃন্দ দ্রুত বিষয়টি চিহ্নিত করে সহায়তার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

দুইটি পরিবারকে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা ঘরে বসে আয় করতে পারেন এবং পরিবারের স্বনির্ভরতা অর্জন সম্ভব হয়। অপর একটি পরিবারকে দেওয়া হয়েছে নগদ অর্থ, যার মাধ্যমে তারা চলমান সংকট মোকাবেলার পথ খুঁজে নিতে পারবেন। এই সহায়তা কেবল এককালীন কোনো দান নয়, বরং একটি আত্মনির্ভরশীল জীবন গড়ার সম্ভাবনার বীজ বপন বলেই বিবেচিত হচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে আরও জানান, জামায়াত দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন দুর্যোগ, মহামারি বা সাময়িক দুঃসময়ে মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সংগঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও রয়েছে বিস্তৃত। তাদের মতে, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বাইরে থেকেও যদি প্রতিটি রাজনৈতিক সংগঠন নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমাজকল্যাণমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করে, তাহলে জাতীয় পর্যায়ে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব অনেকাংশেই হ্রাস পাবে।

এই ধরণের মানবিক সহায়তা স্থানীয়ভাবে আশার আলো ছড়াচ্ছে এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি জনগণের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলছে। সমাজের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা যে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের মৌলিক দায়িত্ব—এমন বার্তাও এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে।

এছাড়া আয়োজনে অংশগ্রহণকারী স্থানীয়রা এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও এমন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। অনেকেই মনে করছেন, সংকটময় মুহূর্তে রাজনৈতিক দলগুলোর এমন সহানুভূতিশীল ও গঠনমূলক ভূমিকাই হতে পারে দেশের মানুষের আস্থার উৎস।

জামায়াত নেতারা আশ্বাস দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতেও এই ধরণের সহায়তা কর্মসূচি নিয়মিতভাবে চালু থাকবে এবং প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে আরও বেশি সংখ্যক সুবিধাবঞ্চিত পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই কার্যক্রম ইতিমধ্যেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, যা রাজনৈতিক সামাজিক দায়বদ্ধতার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।