সর্বশেষ :
ভারত না এলে বড় আর্থিক সংকটে পড়বে বিসিবি ভোট বিক্রি করলেই পাঁচ বছর নির্যাতনের শিকার হবেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনেই প্রকাশ পাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা: রিজভী চট্টগ্রামে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত তিন আবুধাবিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর কপাল খুললো: লটারি জিতলেন ৭৫ কোটি টাকা কোচ কাবরেরার পদত্যাগ চাওয়ায় বাফুফের কমিটি থেকে বাদ শাহীন ‘আমাদের কী পাপ’: ত্রাণ আনতে গিয়ে ভাইকে হারানো গাজাবাসী শিশুর হৃদয়বিদারক আহ্বান ভাঙনের গল্পে আত্মজয়: তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি মিথিলা মসজিদের মাইকে ঘোষণা, প্রকাশ্যে পিটিয়ে মা ও দুই সন্তানকে হত্যা: ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও মামলা হয়নি আফগান সীমান্তে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: ‘ভারত-সমর্থিত’ ৩০ সন্ত্রাসী নিহতের দাবি পাকিস্তানের

আওয়ামী লীগ ইতিহাসে স্থান পাবে, রাজনীতিতে নয়”: জাতীয় প্রেস ক্লাবে ড. রিপনের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫
  • ২ বার
আওয়ামী লীগ ইতিহাসে স্থান পাবে, রাজনীতিতে নয়": জাতীয় প্রেস ক্লাবে ড. রিপনের ঘোষণা

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ‘২০২৫ | নিজস্ব প্রতিবেদক | একটি বাংলাদেশ অনলাইন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। তিনি বলেন, এই দলটির অস্তিত্ব শুধু ইতিহাসে টিকে থাকবে, রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়। ফ্যাসিবাদ, দুঃশাসন, লুটপাট ও গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এই দল আর ফিরে আসতে পারবে না।

শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত ‘সারাদেশের বিভিন্ন স্তরে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী দোসরদের গ্রেফতার এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ দ্রুত সৃষ্টি করার দাবিতে’ এক প্রতীকী তারুণ্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন’ আয়োজিত এই সমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।

ড. রিপন বলেন, “যে রাজনৈতিক দল জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তার অবসান সময়ের ব্যাপার মাত্র। আওয়ামী লীগ নিজের ভুল ও জনবিরোধী নীতির কারণে আজ জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে। মানবাধিকারের লঙ্ঘন, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুটপাট—সবই তাদের পতনের প্রধান কারণ। তাদের পতন কোনো আইনি নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে নয়, জনগণের ঘৃণা ও অনাস্থার মধ্য দিয়েই হচ্ছে।”

তিনি দাবি করেন, “২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আমরা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিলাম। সেই সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল ১৭ বছর আগে। আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল—একটি জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করা। যেখানে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি বা উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা নিজেকে মোগল সম্রাট মনে করবেন না, বরং জনগণের সেবক হিসেবে জবাবদিহিতার আওতায় থাকবেন।”

সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনারা ঘুষ খাবেন, দুর্নীতি করবেন, সামান্য বেতনের চাকরি করে ঢাকায় একাধিক বাড়ি বানাবেন—তবু কেউ আপনাদের কিছু বলবে না, এমনটা আর হবে না। জবাবদিহি করতে হবে সবাইকে। এখন যারা আমলাতন্ত্রে বসে আছেন এবং বিতর্কিত নির্বাচনগুলোর সহযোগী ছিলেন—তাদের বিচারও করতে হবে।”

২০০৮-০৯ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশকে ভারতের করদ রাজ্যে পরিণত করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। ১/১১ ছিল সেই পরিকল্পনার অংশ। শেখ হাসিনার দীর্ঘমেয়াদি অবৈধ শাসন পাকাপোক্ত করতে তখনই নাটক সাজানো হয়েছিল। এখন সেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে, এবং জনগণই এর অবসান ঘটিয়েছে।”

ড. রিপন বলেন, “২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪—এই তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরাসরি ভোট কারচুপিতে যুক্ত ছিলেন। দিনভর ভোট লুট হয়েছে, রাতের আঁধারে বাক্স ভরা হয়েছে। এখন তাদের অনেকে প্রমোশন চাচ্ছেন। এটা হতে পারে না। আগে তাদের অপকর্মের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার হরণে যারা ভূমিকা রেখেছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।”

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যত সম্পর্কে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এটা নিষিদ্ধ করা বা না করার বিষয় নয়। আওয়ামী লীগ এমনভাবে নিজেদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, এমন অপরাধ করেছে, এমন স্বৈরাচার কায়েম করেছে—যার ফলে বাংলাদেশের মানুষ এই দলটিকে আর রাজনীতির মাঠে দেখতে চায় না। এটা জনগণের সিদ্ধান্ত।”

তিনি আরও বলেন, “যারা প্রশাসনে বসে এখনও আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করছেন, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের বহু শিক্ষিত যুবক চাকরির অপেক্ষায় বসে আছে, অথচ দুর্নীতিবাজরা প্রশাসনের উচ্চপদে আসীন হয়ে প্রভাব খাটাচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বুলু, রাজনৈতিক নেত্রী রহিমা শিকদারসহ অনেকে। তারা সবাই একই সুরে বলেন, দেশের প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে এবং আগত প্রজন্মের ভবিষ্যৎ রক্ষা করতে হলে স্বৈরাচার ও দুর্নীতির রাজনীতি চিরতরে বিদায় করতে হবে।

জনগণের মধ্যে যেভাবে সচেতনতা তৈরি হয়েছে, তা জাতির জন্য আশাব্যঞ্জক বলেও মনে করছেন তাঁরা। বক্তারা বলেন, এ গণজাগরণই ভবিষ্যতের জন্য শক্ত ভিত গড়ে দেবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া