সর্বশেষ :
ভারত না এলে বড় আর্থিক সংকটে পড়বে বিসিবি ভোট বিক্রি করলেই পাঁচ বছর নির্যাতনের শিকার হবেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনেই প্রকাশ পাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা: রিজভী চট্টগ্রামে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত তিন আবুধাবিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর কপাল খুললো: লটারি জিতলেন ৭৫ কোটি টাকা কোচ কাবরেরার পদত্যাগ চাওয়ায় বাফুফের কমিটি থেকে বাদ শাহীন ‘আমাদের কী পাপ’: ত্রাণ আনতে গিয়ে ভাইকে হারানো গাজাবাসী শিশুর হৃদয়বিদারক আহ্বান ভাঙনের গল্পে আত্মজয়: তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি মিথিলা মসজিদের মাইকে ঘোষণা, প্রকাশ্যে পিটিয়ে মা ও দুই সন্তানকে হত্যা: ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও মামলা হয়নি আফগান সীমান্তে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: ‘ভারত-সমর্থিত’ ৩০ সন্ত্রাসী নিহতের দাবি পাকিস্তানের

যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার লড়াই: জাতীয় স্বার্থে ইউনূসের পদক্ষেপের গুরুত্ব

একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫
  • ৫৪ বার

প্রকাশ: ১২ই জুন, ২০২৫ • একটি বাংলাদেশ ডেস্ক • একটি বাংলাদেশ অনলাইন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে যখন শ্লেষ, বিদ্রুপ এবং রাজনৈতিক বিদ্বেষ প্রাধান্য পাচ্ছে, তখন জাতীয় স্বার্থে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক লড়াই ব্যঙ্গের বস্তুতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি ব্রিটেনে পাচার হওয়া ২৩৪ মিলিয়ন ডলার ফেরত আনার জন্য বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের একজন সদস্য হিসেবে লন্ডনে অবস্থান করছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কিন্তু এই রাষ্ট্রিক গুরুত্বের সফর নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়েছে নানা ধরণের গুজব, কটাক্ষ ও নেতিবাচক প্রচার।

প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকা এই বিপুল পরিমাণ অর্থ—যা বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে পাচার হয়েছে—ফেরত আনাই এই সফরের মূল উদ্দেশ্য। অথচ রাজনৈতিক বিভক্তি এবং ব্যক্তি বিদ্বেষ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টাও রাজনৈতিক ট্রল এবং নেতিবাচক ভাষ্য থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ড. ইউনূসের এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে বলা হচ্ছে, তিনি লন্ডনে গিয়েছেন “নিজের স্বার্থে” বা কোনোভাবে “আত্মরক্ষার চেষ্টায়”। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, এই অর্থ যদি ফেরত আনা সম্ভব হয়, তাহলে এর সুবিধাভোগী হবেন বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ। ইউনূসের ব্যক্তিগত কোনো লাভ হবে না, বরং আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতে হতে হয়তো তার দায়িত্বের মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে, রাজনৈতিক নেতারা যারা অতীতে বিদেশি শক্তির সাথে সেলফি তুলেছেন, মাথা নত করে সাক্ষাৎ করেছেন, তারা এখন এই বৈঠক না করা বা দেরিতে সাক্ষাৎ করা নিয়ে হাসি-তামাশায় মেতে উঠেছেন। অথচ এই অর্থ আদায়ের চেষ্টা বাংলাদেশের সার্বভৌম অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। বিদেশে পাচার হওয়া টাকাগুলো বাংলাদেশের জনগণের পরিশ্রমের ফসল, যার ওপর দেশের গরিব জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন নির্ভর করে। এই প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকারকে চাপ দেওয়া, বৈঠকে অংশ নেওয়া এবং আইনি প্রক্রিয়ার ভেতরে থেকে দেশের পক্ষের যুক্তি তুলে ধরা নিঃসন্দেহে একটি সাহসী উদ্যোগ।

আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর কেউ কেউ এই ঘটনাকে ব্যঙ্গ করে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে, যা দুঃখজনক। কারণ, এই মুহূর্তে দল বা ব্যক্তির স্বার্থ নয়, বরং দেশের স্বার্থে একযোগে কাজ করা উচিত। এই টাকা ফেরত এলে তা কোনো একক ব্যক্তি বা দলের অর্জন হবে না, বরং তা হবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পথে একটি বড় ধাপ।

ড. ইউনূস ব্রিটেনের মতো শক্তিশালী একটি দেশের বিরুদ্ধে এমন একটি অর্থনৈতিক আইনি লড়াইয়ে নাম লেখিয়েছেন, যেখানে রাষ্ট্রনির্ভর কূটনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপে জয় লাভ করা সহজ নয়। তবুও জাতীয় স্বার্থে তিনি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন। এটি নিঃসন্দেহে সাহসিকতার পরিচয় এবং এক ধরনের রাষ্ট্রিক দায়িত্ববোধের প্রতিফলন।

এই প্রেক্ষাপটে, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এই চেষ্টাকে সম্মান জানানো উচিত। কারণ পাচার হওয়া অর্থ ফিরে এলে তা দিয়ে দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো কিংবা দারিদ্র্য বিমোচনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের মর্যাদাও বাড়বে।

তাই এখন প্রয়োজন, সকল ধরনের বিভাজন ও কুৎসা প্রচারের ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধভাবে এই প্রচেষ্টাকে সফল করার জন্য জাতীয়ভাবে সমর্থন জানানো। ড. ইউনূসের পাশে দাঁড়ানো মানেই কেবল একটি ব্যক্তির সমর্থন নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানো। এবং এই আন্দোলনে জয় মানেই দেশের মানুষের ন্যায্য পাওনার প্রতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া