সর্বশেষ :
ভারত না এলে বড় আর্থিক সংকটে পড়বে বিসিবি ভোট বিক্রি করলেই পাঁচ বছর নির্যাতনের শিকার হবেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনেই প্রকাশ পাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা: রিজভী চট্টগ্রামে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত তিন আবুধাবিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর কপাল খুললো: লটারি জিতলেন ৭৫ কোটি টাকা কোচ কাবরেরার পদত্যাগ চাওয়ায় বাফুফের কমিটি থেকে বাদ শাহীন ‘আমাদের কী পাপ’: ত্রাণ আনতে গিয়ে ভাইকে হারানো গাজাবাসী শিশুর হৃদয়বিদারক আহ্বান ভাঙনের গল্পে আত্মজয়: তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি মিথিলা মসজিদের মাইকে ঘোষণা, প্রকাশ্যে পিটিয়ে মা ও দুই সন্তানকে হত্যা: ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও মামলা হয়নি আফগান সীমান্তে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: ‘ভারত-সমর্থিত’ ৩০ সন্ত্রাসী নিহতের দাবি পাকিস্তানের

পাঁচ দিনের পরিবর্তে টেস্ট ক্রিকেট এখন হবে চার দিনে

একটি বাংলাদেশ অনলাইন
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫
  • ৮ বার
পাঁচ দিনের পরিবর্তে টেস্ট ক্রিকেট এখন হবে চার দিনে

প্রকাশ: ১৮ জুন, ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন

টেস্ট ক্রিকেটে আসতে চলেছে এক বড় ধরনের পরিবর্তন, যা ক্রিকেটের শতবর্ষের ঐতিহ্যকে এক নতুন রূপে উপস্থাপন করতে যাচ্ছে। পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচের প্রথাগত কাঠামোয় পরিবর্তন এনে এবার চার দিনের টেস্ট ম্যাচ চালুর পরিকল্পনা করছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। এ পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য হলো সাদা পোশাকের ক্রিকেটকে আরও জনপ্রিয়, বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী করে তোলা, বিশেষ করে আর্থিক সীমাবদ্ধতা ও সময় সংকটে থাকা দলগুলোর জন্য টেস্ট ক্রিকেটকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলা।

আইসিসির এই প্রস্তাব এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা না হলেও, ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য গার্ডিয়ান’ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সংগঠনটি ইতোমধ্যে এই পরিকল্পনার অনুমোদনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। লন্ডনের ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনাল চলাকালে আইসিসির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ। ওই বৈঠকে তিনি চার দিনের টেস্ট ম্যাচের ধারণাকে নীতিগতভাবে অনুমোদন দেন বলে জানা গেছে।

বর্তমানে ২০২৫-২৭ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে দলগুলো প্রচলিত পাঁচ দিনের টেস্টই খেলবে। তবে পরবর্তী ২০২৭-২৯ চক্রে চার দিনের টেস্ট চালু করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এই পরিবর্তনের ফলে টেস্ট ম্যাচের সময়সীমা একদিন কমে আসবে এবং সেইসাথে ম্যাচ আয়োজনের খরচ, সময় ও অন্যান্য ব্যয়ও হ্রাস পাবে। এতে করে তুলনামূলক ছোট ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর পক্ষে আরও বেশি টেস্ট ম্যাচ আয়োজন করা ও অংশগ্রহণ করা সহজ হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, আইসিসির এই সিদ্ধান্ত টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সময় ও বাজেট সংকটে থাকা দলগুলো টেস্ট খেলায় আগ্রহ হারাচ্ছে, ফলে খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জনের পথ সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। চার দিনের টেস্ট এই সংকট কাটাতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যদিও ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে অনুষ্ঠিত জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী সিরিজগুলো—যেমন অ্যাশেজ কিংবা বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি—আগের মতোই পাঁচ দিনের হবে, বাকি দলগুলোর মধ্যকার বেশিরভাগ সিরিজ চার দিনে সীমাবদ্ধ থাকবে। এই ভিন্নতা প্রথাগত ঐতিহ্য রক্ষা এবং নতুন বাস্তবতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার একটি প্রয়াস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আইসিসি সূত্রে আরও জানা গেছে, চার দিনের টেস্টে প্রতিদিন ৯০ ওভারের পরিবর্তে খেলা হবে ৯৮ ওভার। অর্থাৎ দিনে আরও বেশি খেলা নিশ্চিত করে ম্যাচটি চার দিনের মধ্যেই ফলাফলে পৌঁছানোর সম্ভাবনা বাড়ানো হবে। সেইসাথে দলগুলোর সময় অপচয়ের প্রবণতা কমাতে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থাও থাকবে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, চার দিনের টেস্ট ক্রিকেট একেবারেই নতুন নয়। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো চার দিনের টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়। এরপর ২০১৯ ও ২০২৩ সালে ইংল্যান্ড আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুইটি চার দিনের টেস্ট খেলেছে। এমনকি সর্বশেষ গত মাসেও ইংল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে এই ফরম্যাটে একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে টেস্ট সিরিজ আয়োজনের সময়ও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। যেমন, তিনটি ম্যাচের একটি সিরিজ তিন সপ্তাহের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব হবে, যা পূর্বে প্রায় এক মাসের বেশি সময় নিত। এতে খরচ বাঁচবে এবং দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখাও সহজ হবে।

বিশ্বজুড়ে ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও, অনেকেই মনে করছেন এ উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদে টেস্ট ক্রিকেটের অস্তিত্ব রক্ষা ও জনপ্রিয়তা ধরে রাখার পথে একটি বাস্তবধর্মী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। বিশেষ করে যেখানে দর্শকসংখ্যা হ্রাস, সম্প্রচার জটিলতা এবং আর্থিক চাপে টেস্ট ক্রিকেট চ্যালেঞ্জের মুখে, সেখানে চার দিনের ম্যাচই হতে পারে টেস্ট ফরম্যাটের নবজাগরণের সূচনা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া