প্রকাশ: ২১শে জুন, ২০২৫ | একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী আলোচনা ও উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সর্বশেষ তদন্ত প্রতিবেদন এবং বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্বস্ত সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে। ইতিমধ্যে দেশটির কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ রয়েছে, যা দিয়ে কমপক্ষে নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব বলে জানিয়েছে আইএইএ।
গত কয়েক বছরে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি ত্বরান্বিত করেছে এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ইরান প্লুটোনিয়াম ভিত্তিক বোমা তৈরির দিকেও অগ্রসর হতে পারে। আইএইএ’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে মাত্র এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে।
এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে ইরানের ওপর হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে দুই সপ্তাহ সময় নেওয়া হয়েছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিলম্ব ইরানকে প্রস্তুত হওয়ার সুযোগ দিয়েছে কি না, তা নিয়ে গভীর সন্দেহ রয়েছে। যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক হুমকি বন্ধ করতে চায়, তাহলে দ্রুত ও নিষ্পত্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল বলে মত দিচ্ছেন অনেকেই।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন বাংকার ব্লাস্টার মিসাইল পৌঁছানো কঠিন হবে বলে সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে ইরান যদি সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে থাকে, তাহলে তা আগ্রাসনের জন্য নয়, বরং আত্মরক্ষার জন্যই ব্যবহার করতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এই সংকটের মধ্যে ইরানের দৃঢ়তাকে অনেকেই সমর্থন করছেন। দেশটির প্রতি সংহতি জানিয়ে বলা হচ্ছে, ইরানের এই প্রতিরোধ শুধু একটি জাতির সংকল্পই নয়, বরং আত্মমর্যাদা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি অঙ্গীকারেরও প্রতীক। ইতিহাস সাক্ষী থাকবে, কোনো জাতি যখন তার অস্তিত্ব রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়, তখন কোনো পরাশক্তিই তাকে দমাতে পারে না।
বিশ্ব সম্প্রদায় এখন ইরানের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে সকল পক্ষ থেকে। তবে উত্তেজনা যে প্রতিদান বাড়ছে, তা নিয়ে কারও কোনো সন্দেহ নেই।