সর্বশেষ :
নির্বাচনের আগে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করাই প্রধান শর্ত: ডা. শফিকুর রহমান আওয়ামী লীগ ইতিহাসে স্থান পাবে, রাজনীতিতে নয়”: জাতীয় প্রেস ক্লাবে ড. রিপনের ঘোষণা ব্যাংকক বিমানবন্দরে অন্তর্বাসে পাইথন লুকিয়ে প্রাণী পাচারের চেষ্টা, পুরোনো অপরাধী আবারও ধরা আর যেন কোনো স্বৈরাচারী শাসন গড়ে না উঠতে পারে, সেজন্য সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে: নাহিদ জুলাইয়ের বিপ্লবী ছাত্র-জনতা ‘মব’ নয়, গণতন্ত্র রক্ষায় নিয়োজিত শক্তি: তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সঞ্চয়পত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা: ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যবিত্ত ও বয়স্ক জনগোষ্ঠী ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের পরপরই ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা সিমন্সের সংক্ষিপ্ত অনুপস্থিতি, শ্রীলঙ্কা সফরে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তাকে ছাড়াই মাঠে নামবে বাংলাদেশ অমিতাভের প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত জয়া, আলোচনায় ‘ডিয়ার মা’র ট্রেলার এল ক্লাসিকোর দিনক্ষণ চূড়ান্ত, প্রকাশিত হলো ২০২৫-২৬ লা লিগার সূচি

চীনবিরোধী জোটে দৃঢ় বার্তা: ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা নিয়ে কোয়াড বৈঠকে রুবিও

একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫
  • ৩ বার
চীনবিরোধী জোটে দৃঢ় বার্তা: ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা নিয়ে কোয়াড বৈঠকে রুবিও

প্রকাশ: ২রা জুলাই, ২০২৫ | একটি বাংলাদেশ ডেস্ক | একটি বাংলাদেশ অনলাইন

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্য এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে অনুষ্ঠিত কোয়াড বৈঠকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও নিজেই উপস্থিত ছিলেন এবং বৈঠক শেষে তার বক্তব্যে আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি অর্জনে যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

বুধবার (২ জুলাই) ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের ভেরিফায়েড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়। মার্কো রুবিও বলেন, “কোয়াডভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে একযোগে আমাদের কাজ নিয়ে আলোচনা করেছি।”

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, কোয়াডের এই সাম্প্রতিক বৈঠক কেবল একটি আনুষ্ঠানিক আলোচনা ছিল না, বরং চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য মোকাবেলায় এটি ছিল একটি প্রতীকী জবাবও। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। সমুদ্রপথে আধিপত্য বিস্তার, দ্বীপ দখল, সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোসহ চীনের পদক্ষেপে ক্রমাগত অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। কোয়াড জোট সেই প্রেক্ষাপটেই আত্মপ্রকাশ করে এবং দিনে দিনে আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

এ বৈঠকে চার দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে সমুদ্রপথে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মুক্ত ও ন্যায্য বাণিজ্য প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমন্বিত প্রচেষ্টার বিষয়গুলো। সামুদ্রিক বাণিজ্য রুটের ওপর নির্ভরশীল এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যৌথ টহল, প্রযুক্তি বিনিময় এবং গোয়েন্দা সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে কোয়াড জোটের এই ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাঝেও রয়েছে ভেতরকার কিছু টানাপোড়েন। জাপান এই বৈঠকের আগে পূর্বনির্ধারিত একটি বার্ষিক প্রতিরক্ষা বৈঠক স্থগিত করেছে। টোকিও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি প্রতিরক্ষা ব্যয়ের কারণে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। ফলে ওয়াশিংটন ও টোকিওর সম্পর্কেও কিছুটা ভাঙন তৈরি হয়েছে বলে পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন।

এদিকে, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কও সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা উত্তপ্ত। বিশেষ করে, মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্য ঘিরে দিল্লির অসন্তোষ স্পষ্ট হয়েছে। এপ্রিলে কাশ্মীরের পর্যটকদের ওপর হামলার পর ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি নিজেই ভারত-পাকিস্তানের সম্ভাব্য যুদ্ধ ঠেকিয়েছেন। এই বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি।

আরও জটিলতা তৈরি হয়েছে কোয়াডের সদস্য দেশ অস্ট্রেলিয়ার দিক থেকেও। দেশটির জন্য পারমাণবিক সাবমেরিন সরবরাহ প্রকল্প ‘আকুস’ নিয়ে পেন্টাগনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা এলব্রিজ কোলবির মন্তব্য ও পদক্ষেপ ক্যানবেরায় বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং অস্পষ্ট বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আস্থা কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলেও মত বিশ্লেষকদের।

বিশ্বব্যাপী শুল্কনীতি, কূটনৈতিক শূন্যতা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের নানা অগোছালো পদক্ষেপ কোয়াডের অগ্রযাত্রাকে প্রভাবিত করছে। যুক্তরাষ্ট্র-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো পূরণসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম এখনও সম্পন্ন হয়নি। এসব কারণেই সমন্বিত কোয়াড কৌশল বাস্তবায়নে গতি কমে যাচ্ছে বলে মনে করেন ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস)-এর ভারতবিষয়ক গবেষক রিচার্ড রসো।

সবকিছু সত্ত্বেও, কোয়াডের এই বৈঠক আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীনবিরোধী জোটের সক্রিয়তার নতুন ইঙ্গিত দেয়। মার্কো রুবিওর নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র এই বার্তা স্পষ্ট করেছে যে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা কেবল মুখে নয়, বাস্তব কর্মপন্থায়ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে সেই প্রতিশ্রুতি কতটা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নির্ভর করছে জোটের অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও কৌশলগত সিদ্ধান্তগুলোর ওপর।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া