সর্বশেষ :
ভারত না এলে বড় আর্থিক সংকটে পড়বে বিসিবি ভোট বিক্রি করলেই পাঁচ বছর নির্যাতনের শিকার হবেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনেই প্রকাশ পাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা: রিজভী চট্টগ্রামে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত তিন আবুধাবিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর কপাল খুললো: লটারি জিতলেন ৭৫ কোটি টাকা কোচ কাবরেরার পদত্যাগ চাওয়ায় বাফুফের কমিটি থেকে বাদ শাহীন ‘আমাদের কী পাপ’: ত্রাণ আনতে গিয়ে ভাইকে হারানো গাজাবাসী শিশুর হৃদয়বিদারক আহ্বান ভাঙনের গল্পে আত্মজয়: তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি মিথিলা মসজিদের মাইকে ঘোষণা, প্রকাশ্যে পিটিয়ে মা ও দুই সন্তানকে হত্যা: ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও মামলা হয়নি আফগান সীমান্তে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: ‘ভারত-সমর্থিত’ ৩০ সন্ত্রাসী নিহতের দাবি পাকিস্তানের

গণরোষের মুখে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর: আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ঘটনা

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫
  • ২ বার
গণরোষের মুখে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর: আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ঘটনা

প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৫ | নিজস্ব সংবাদদাতা | একটি বাংলাদেশ অনলাইন

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর শাহপাড়া গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটেছে চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী এক নেতার বাড়িতে চাঁদা দাবির অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবলকে স্থানীয় জনতা গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম রুহুল আমিন, যিনি বর্তমানে আগের একটি অভিযোগে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত অবস্থায় রয়েছেন। ঘটনাটি প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মধ্যকার আস্থার সংকট এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রশ্ন নতুন করে উত্থাপন করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ (যার কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ) সভাপতি আবদুল বাকীর বাড়িতে কয়েক দিন ধরেই সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন কনস্টেবল রুহুল আমিন। নিজেকে ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে তিনি বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। বৃহস্পতিবার সকালে আবারও ওই বাড়িতে প্রবেশ করে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল বাকীর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সবুজকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ দাবি করেন।

রুহুল আমিনের দাবি ছিল, বাড়িতে অস্ত্র লুকানো আছে এবং তিনি নিজেই একটি টিনের বাক্স থেকে শটগানের গুলি বের করে সেটিকে প্রমাণ হিসেবে দেখিয়ে সবুজকে গ্রেপ্তার করার হুমকি দেন। এরপর আরও কিছু গুলি একটি ব্যাগ থেকে বের করে তিনি বলেন, এসব দিয়েই মামলা করা হবে। তবে ঘটনাটি মোড় নেয় ভিন্ন দিকে, যখন সবুজের বোন অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন এসে পুরো বিষয়টির প্রতিবাদ জানান এবং পুলিশের দাবিকৃত চাঁদার অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানান।

অ্যাডভোকেট শাপলার ভাষ্যমতে, তার ভাই দীর্ঘদিন ধরে ব্রেন টিউমারে ভুগছেন। একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অপরাধমূলক। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। ততক্ষণে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং রুহুল আমিনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তখন শুরু হয় গণধোলাই।

খবর পেয়ে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে কনস্টেবল রুহুল আমিনকে উদ্ধার করে এবং তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন পরে শাজাহানপুর থানায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির লিখিত অভিযোগ করেন।

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম পলাশ গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য আগে থেকেই পুলিশের লাইনসে সংযুক্ত ছিলেন এবং রাতে ডিউটি শেষে অস্ত্র জমা দিলেও গুলিগুলো হয়তো জমা দেননি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

এই ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে যেমন ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে, তেমনি প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্তদের ভূমিকা এবং অভ্যন্তরীণ নজরদারির ব্যর্থতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য যদি নিজেই আইন ভাঙেন, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?

এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত, দায়ীদের বিচার এবং পুলিশ বিভাগে অভ্যন্তরীণ শুদ্ধি অভিযান এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। তা না হলে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি হবে এবং প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থার ভাঙন আরও গভীর হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া