প্রকাশ: ০৯ই জুন ২০২৫ | নিজস্ব সংবাদদাতা | একটি বাংলাদেশ অনলাইন
যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ সিদ্দিক, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি, সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য চিঠি পাঠান। তবে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তার এই সাক্ষাৎ প্রার্থনা আমলে নেওয়া হয়নি। ঢাকার কূটনৈতিক ও উচ্চপদস্থ সূত্রগুলো জানিয়েছে, টিউলিপের চিঠিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, ফলে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি।
ড. ইউনূস বর্তমানে চার দিনের সরকারি সফরে সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। সফরের সময় তিনি বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন এবং ১১ জুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন।
টিউলিপ সিদ্দিক তার চিঠিতে উল্লেখ করেন যে, তিনি আশা করেন তাদের মধ্যে একটি বৈঠক ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের সৃষ্ট ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতে সাহায্য করবে। তিনি আরও দাবি করেন, বাংলাদেশে তার কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই এবং তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের শিকার। তবে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তার এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
গত জানুয়ারিতে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের নগরমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগের পেছনে বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চলমান তদন্তের বিষয়টি ছিল। বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ফ্ল্যাটসহ নানা সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তুলেছে। তবে, টিউলিপ সিদ্দিক এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের শিকার।
বাংলাদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার শুরু হয়েছে। তার শাসনামলে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অবৈধ সুবিধাভোগের অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচনা চলছে এবং টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তবে, তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, তিনি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের’ শিকার।
এই পরিস্থিতিতে, টিউলিপ সিদ্দিকের ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রার্থনা নাকচ হওয়া এবং বাংলাদেশ সরকারের কঠোর প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং রাজনৈতিক চাপের একটি উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।