প্রকাশ: ১৩ জুন, ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত রাখতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় অবস্থিত আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আমদানিকৃত কয়লার মূল্য নিয়ে প্রায় দুই বছর ধরে চলা বিরোধ মিটিয়ে নিতে ২৩ জুন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছে। এতে মূলত কয়লার দাম নির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতা এবং ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ সরবরাহের আর্থিক কাঠামো নিয়ে সমাধান অন্বেষণ করা হবে ।
বৈঠক দুই পক্ষের দীর্ঘ আলোচনার ফলাফল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২০১৭ সালে ২৫ বছরের জন্য স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় আদানি গ্রুপের দুইটি ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ইউনিট থেকে পাওয়ার ক্রয় নির্ধারণ হয়েছিল আশির দশকে প্রতিষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসল ও ইন্দোনেশিয়ার কয়লা সূচক মূল্য ভিত্তিক সূত্রে। তবে আদানি দাবি করেছে তারা উন্নত মানের অস্ট্রেলীয় কয়লার হিসাব মিশ্র মূল্য হিসেবে হিসাব দেয়, যা পিডিবি ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে বিবেচনা করছে ।
২০২৪ সালের জুলাই থেকে আদানি ২০‑২৫ শতাংশ বেশি বিল পাঠানো শুরু করে। পিডিবি মে মাস পর্যন্ত তাদের দাবি করেনা, ৪৮০‑৪৮৫ মিলিয়ন ডলার বকেয়া। আর আদানি দাবি করে সেটি প্রায় ৭০০‑৮৪৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছে । এই পার্থক্যের কারণ হিসেবে পিডিবি অভিযোগ করে, আদানি চুক্তির মূল্য সূত্র নিজেদের মতো ব্যাখ্যা করছে।
ফেব্রুয়ারিতে ভার্চুয়াল বৈঠকে পিডিবি পূর্বের মূল্য বজায় রাখার প্রস্তাব দেয়, যা লিখিতভাবে আদানি গ্রহণ করে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দেয় । মে শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে বিল ও মূল্যসূত্র নিয়ে যে ফারাক দেখা দিয়েছিল, সেটি নিয়ে ২৩ জুন এই বৈঠকে আইনি পরামর্শদাতাদের সহায়তায় একটি সমাধান কাঠামো গঠনের আশা করা হচ্ছে।
পিডিবি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, “চুক্তিতে কয়লার মূল্য নির্ধারণের সূত্র স্পষ্ট রয়েছে। বিষয়টি আইনগত হলেও, আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে চাই” । এ ছাড়াও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অন্যান্য আর্থিক এবং সরবরাহ কাঠামো বিষয়গুলোও আলোচনায় উঠে আসবে।
এই বৈঠক কেবল বর্তমান দ্বিমতের শেষ নয়, বরং দুই দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পর্কের ভবিষ্যতের নির্ধারণী হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে এটি সফল না হলে আইনি লড়াই ও সিঙ্গাপুর আর্বিট্রেশন পদ্ধতিতে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।