প্রকাশ: ১৬ জুন, ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাবেক আমির ও বিশিষ্ট ইসলামী রাজনীতিবিদ সৈয়দ গোলাম সারওয়ার আর নেই। সোমবার (১৬ জুন) ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ছিলেন।
সৈয়দ গোলাম সারওয়ার ছিলেন নরসিংদী জেলা শহরের ঘোড়াদিয়া এলাকার বাসিন্দা, মরহুম সৈয়দ শামছুল হক মাস্টারের সন্তান। যদিও জন্ম ও পারিবারিক শিকড় ছিল নরসিংদীতে, তিনি ছাত্রজীবন থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বসবাস শুরু করেন এবং সেখানেই ইসলামী রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে তিনি বিএ এবং পরে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ছাত্রজীবনে তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সভাপতি হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। পরে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। বিশেষ করে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি টানা আট বছর জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর এই সময়ে সংগঠনটির কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বিস্তৃত হয়।
সৈয়দ গোলাম সারওয়ার ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ ইসলামী আন্দোলনকর্মী। জীবদ্দশায় বহুবার রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার হন এবং কারাবরণ করেন। তাঁর আপসহীন ভূমিকা, নৈতিক দৃঢ়তা ও আন্দোলনের প্রতি গভীর অঙ্গীকার তাঁকে দল ও এলাকার মানুষের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত করে তোলে।
আজ সোমবার বাদ আসর তাঁর জানাজার নামাজ নরসিংদীর ঐতিহ্যবাহী জামেয়া কাসেমিয়া মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে মাদরাসা সংলগ্ন কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অঙ্গনে শোকের সুর প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আমির মাওলানা মোবারক হোসাইন ও জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আমিনুল ইসলাম। এক শোকবার্তায় তাঁরা বলেন, সৈয়দ গোলাম সারওয়ার ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের একজন সাহসী, নিষ্ঠাবান ও সংগ্রামী নেতা। তাঁর ইন্তেকালে ইসলামী আন্দোলন এক বলিষ্ঠ নেতৃত্ব হারিয়েছে। তাঁরা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
সৈয়দ গোলাম সারওয়ারের মৃত্যু কেবল জামায়াতে ইসলামী নয়, বরং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধর্মপ্রাণ জনগণের মাঝেও এক অপূরণীয় ক্ষতির সৃষ্টি করেছে। তাঁর অবদান ইসলামী রাজনীতি ও সমাজসেবায় চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।