সর্বশেষ :
ভারত না এলে বড় আর্থিক সংকটে পড়বে বিসিবি ভোট বিক্রি করলেই পাঁচ বছর নির্যাতনের শিকার হবেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনেই প্রকাশ পাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা: রিজভী চট্টগ্রামে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত তিন আবুধাবিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর কপাল খুললো: লটারি জিতলেন ৭৫ কোটি টাকা কোচ কাবরেরার পদত্যাগ চাওয়ায় বাফুফের কমিটি থেকে বাদ শাহীন ‘আমাদের কী পাপ’: ত্রাণ আনতে গিয়ে ভাইকে হারানো গাজাবাসী শিশুর হৃদয়বিদারক আহ্বান ভাঙনের গল্পে আত্মজয়: তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি মিথিলা মসজিদের মাইকে ঘোষণা, প্রকাশ্যে পিটিয়ে মা ও দুই সন্তানকে হত্যা: ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও মামলা হয়নি আফগান সীমান্তে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: ‘ভারত-সমর্থিত’ ৩০ সন্ত্রাসী নিহতের দাবি পাকিস্তানের

রোহিঙ্গা সংকট যে খুবই জটিল, তা বিশ্ব সম্প্রদায়কে স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে

একটি বাংলাদেশ অনলাইন
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫
  • ৫ বার
মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাধ্য করতে আন্তর্জাতিক চাপ জারি রাখা উচিত

প্রকাশ: ২০ জুন, ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন

বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক গভীর উদ্বেগ ও দায়িত্ববোধ থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে নতুন করে সজাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, সম্মানজনক এবং স্থায়ী প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে মিয়ানমারের ওপর চাপ বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকারসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

তারেক রহমান বলেন, “বিশ্বের বহু দেশে এখনো উদ্বাস্তু সংকট এক ভয়াবহ এবং অমানবিক বাস্তবতা। জাতিগত নিপীড়ন, সহিংসতা এবং রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতার কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ নিরাপত্তাহীনতা ও ভিটেমাটি হারিয়ে উদ্বাস্তুতে পরিণত হচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকট এর অন্যতম জ্বলন্ত উদাহরণ, যা শুধুমাত্র একটি জাতিগোষ্ঠীর নয়, বরং গোটা মানবজাতির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।”

তিনি বলেন, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে অবস্থান করছে ১৪ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক, যারা গত আট বছর ধরে মিয়ানমারের সামরিক ও জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই বিশাল জনগোষ্ঠী বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছে। তিনি এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন, “রোহিঙ্গা সংকটের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। আমাদের দেশের জনগণ অসাধারণ মানবিকতার পরিচয় দিয়ে এই শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। এটি একটি মানবিক উদাহরণ হিসেবে বিশ্বে বিরল।”

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “এই সংকট দীর্ঘস্থায়ী হলে তা শুধু মানবিক নয়, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবেও ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।” তিনি বলেন, এই সংকটকে এখন আন্তর্জাতিক মহলে ‘সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা সমাধানে কার্যকর ও সময়োপযোগী কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

তারেক রহমান দাবি করেন, বর্তমান সরকারকে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে এই বিষয়ে—রোহিঙ্গাদের বর্তমান অবস্থা, বাংলাদেশের ওপর তাদের উপস্থিতির বহুমাত্রিক চাপ এবং মিয়ানমারের বারবার প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের বাস্তবতা। এই বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা সময়ের দাবি।

তিনি আরও বলেন, “বিশ্বকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে—রোহিঙ্গা সংকট শুধু একটি আঞ্চলিক নয়, বরং বৈশ্বিক মানবিক ইস্যু। এটি এখন আর অবহেলার বিষয় নয়। আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে এমনভাবে সক্রিয় করতে হবে, যাতে রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে ফিরতে পারে।”

তারেক রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে এ বিষয়ে আরও সক্রিয় হতে হবে। শুধু আশ্রয় নয়, রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকার, নিরাপত্তা এবং নাগরিক মর্যাদা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে হবে যেন তারা বাস্তচ্যুত নাগরিকদের দ্রুত ও স্থায়ীভাবে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।

তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনগণের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দাবি ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগের প্রতি দৃঢ় সমর্থনের ঘোষণা দেন। তার ভাষায়, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এই মানবিক সংকট সমাধানে বিশ্বজনীন সংহতির পক্ষে এবং যে কোনো সময়ের চেয়ে আজ এই সংহতি আরও জরুরি।”

এই বাণীতে তারেক রহমান রোহিঙ্গা সংকটকে ঘিরে যে আন্তর্জাতিক উদাসীনতা বিরাজ করছে, সেটিও ইঙ্গিতপূর্ণভাবে তুলে ধরেছেন। তার মতে, এই অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে তা শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

অবশেষে, তিনি বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানান, যেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কূটনৈতিক উদ্যোগ আরও গতিশীল করা হয় এবং মানবিক কর্মকাণ্ড জোরদার করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে নিরবচ্ছিন্ন চাপ অব্যাহত রাখা হয়।

বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে তার এই বিবৃতি শুধু একটি রাজনৈতিক বার্তা নয়, বরং এটি রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি মানবিক এবং কূটনৈতিক অঙ্গীকারের আহ্বান হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া