সর্বশেষ :
ভারত না এলে বড় আর্থিক সংকটে পড়বে বিসিবি ভোট বিক্রি করলেই পাঁচ বছর নির্যাতনের শিকার হবেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনেই প্রকাশ পাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা: রিজভী চট্টগ্রামে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত তিন আবুধাবিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর কপাল খুললো: লটারি জিতলেন ৭৫ কোটি টাকা কোচ কাবরেরার পদত্যাগ চাওয়ায় বাফুফের কমিটি থেকে বাদ শাহীন ‘আমাদের কী পাপ’: ত্রাণ আনতে গিয়ে ভাইকে হারানো গাজাবাসী শিশুর হৃদয়বিদারক আহ্বান ভাঙনের গল্পে আত্মজয়: তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি মিথিলা মসজিদের মাইকে ঘোষণা, প্রকাশ্যে পিটিয়ে মা ও দুই সন্তানকে হত্যা: ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও মামলা হয়নি আফগান সীমান্তে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: ‘ভারত-সমর্থিত’ ৩০ সন্ত্রাসী নিহতের দাবি পাকিস্তানের

বিতর্কের পর গ্রেপ্তার সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল: নির্বাচনী ইতিহাসে নজিরবিহীন মোড়

একটি বাংলাদেশ অনলাইন
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫
  • ৪ বার
বিতর্কের পর গ্রেপ্তার সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল: নির্বাচনী ইতিহাসে নজিরবিহীন মোড়

প্রকাশ: ২৫শে জুন ২০২৫ । একটি বাংলাদেশ ডেস্ক
একটি বাংলাদেশ অনলাইন

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটল যখন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারের খবরটি দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং রাজনৈতিক মহলেও তৈরি হয়েছে নতুন করে বিতর্ক ও উত্তেজনা।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে সাবেক এই সিইসিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কাজী হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়েরকৃত একটি মামলার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাকে আদালতে হাজির করার প্রস্তুতি চলছে।

তবে এই গ্রেপ্তারের বিষয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্যও সামনে এসেছে। এর আগেই, ২৩ জুন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে হাবিবুল আউয়ালের গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ হয়, যেখানে বলা হয় তাকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ এবং সেখান থেকে তাকে সরাসরি ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও পরবর্তীতে ডিএমপি স্পষ্ট করে জানায়, তার গ্রেপ্তার মগবাজার এলাকা থেকে।

মামলার প্রেক্ষাপটও কম জটিল নয়। ২২ জুন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে তিনি তিনজন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে—কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, কেএম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করেন। তাদের পাশাপাশি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়। মোট ২৪ জনের নাম এই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। বিএনপির অভিযোগ, এই ব্যক্তিরা ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে ভোটাধিকার হরণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করেছেন।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, কাজী হাবিবুল আউয়াল ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময় তার নেতৃত্বাধীন কমিশনে সদস্য হিসেবে ছিলেন মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, রাশিদা সুলতানা এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান। তার পূর্বসূরি কেএম নূরুল হুদা ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সিইসির দায়িত্বে ছিলেন এবং তার অধীনে অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যেটিকে নিয়েও বিরোধী দলগুলো বারবার প্রশ্ন তুলেছে।

এই গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিএনপিসহ বিভিন্ন বিরোধী দল দীর্ঘদিন ধরেই সাবেক নির্বাচন কমিশনগুলোর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব, ভোট কারচুপি ও প্রশাসনকে দলীয়করণের অভিযোগ করে আসছিল। এবার সেই অভিযোগ থেকে বাস্তব আইনি পদক্ষেপে রূপ নিয়েছে বিষয়টি, যা বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও বিচার বিভাগের জন্য একটি গভীর পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচন কমিশন হলো একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান, যার ওপর জনগণের আস্থা অটুট থাকা জরুরি। কিন্তু গত কয়েকটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা, ফলাফল এবং প্রশাসনিক আচরণ—সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন তুলেছে। এই গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে সেই বিতর্ক যেন নতুন মাত্রায় প্রবেশ করল।

বর্তমানে গোটা দেশ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে এই মামলার ভবিষ্যৎ গতি প্রকৃতি ও বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা। একইসাথে দেখা যাচ্ছে, সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা নতুন করে তীব্র হতে পারে।

এখন অপেক্ষা, আইন তার নিজস্ব গতিতে কী সিদ্ধান্ত নেয়। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে এটি এক নজিরবিহীন ঘটনা, যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে রাজনীতির ওপর বড় ছাপ ফেলতে পারে।

একটি বাংলাদেশ অনলাইন পরিস্থিতির সার্বিক আপডেট নিয়মিত তুলে ধরবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া