সর্বশেষ :
ভারত না এলে বড় আর্থিক সংকটে পড়বে বিসিবি ভোট বিক্রি করলেই পাঁচ বছর নির্যাতনের শিকার হবেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনেই প্রকাশ পাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা: রিজভী চট্টগ্রামে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত তিন আবুধাবিতে বাংলাদেশি প্রবাসীর কপাল খুললো: লটারি জিতলেন ৭৫ কোটি টাকা কোচ কাবরেরার পদত্যাগ চাওয়ায় বাফুফের কমিটি থেকে বাদ শাহীন ‘আমাদের কী পাপ’: ত্রাণ আনতে গিয়ে ভাইকে হারানো গাজাবাসী শিশুর হৃদয়বিদারক আহ্বান ভাঙনের গল্পে আত্মজয়: তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি মিথিলা মসজিদের মাইকে ঘোষণা, প্রকাশ্যে পিটিয়ে মা ও দুই সন্তানকে হত্যা: ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও মামলা হয়নি আফগান সীমান্তে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: ‘ভারত-সমর্থিত’ ৩০ সন্ত্রাসী নিহতের দাবি পাকিস্তানের

“প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত না হলে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে”— জামায়াত আমির

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫
  • ১৯ বার

প্রকাশ: ৩রা জুন ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনীতিতে যখন নানা সমীকরণ ও প্রস্তুতি চলছে, তখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিয়ে সরব অবস্থান নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে কোনো ধরনের আপোস করবে না জামায়াত। রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত হোটেল শেরাটনে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এই দৃঢ় বক্তব্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “প্রায় এক কোটি দশ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখছেন। অথচ এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে সেটি হবে এক নির্মম উপহাস, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র উভয়ের জন্যই হুমকি।” তিনি আরও বলেন, “যদি রাষ্ট্র প্রবাসীদের এড়িয়ে গিয়ে কোনো নির্বাচন আয়োজন করতে চায়, তবে সেই নির্বাচন কখনোই গণতান্ত্রিক বা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ভোটাধিকার না দেওয়া একটি জাতীয় দুর্ভাগ্য। এতে দেশের রাজনীতি যেমন সংকুচিত হবে, অর্থনীতিও তেমনি দুর্বল হয়ে পড়বে। নির্বাচন কমিশনকে এই বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।” তার মতে, প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই হবে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের প্রধান পূর্বশর্ত।

সাক্ষাৎকারে জামায়াত আমির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবির কথা জানান— আদালতের রায় অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন এবং প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়া। তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন আদালতের রায় মেনে দলের সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো এবং রাজনৈতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।”

তিনি বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন যদি সত্যিই নিরপেক্ষ ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে চান, তবে তাদের প্রথম দায়িত্ব হবে রাজনৈতিক দলগুলোর আইনি অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। জামায়াত ইসলাম সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত, কিন্তু কোনো অবিচার বা ব্যতিক্রম হলে আমরা নিশ্চুপ থাকব না।”

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতা যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষামূলক ধাপ। এই নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য এটি এখন অত্যাবশ্যক।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াত আমিরের বক্তব্য শুধু দলীয় অবস্থান নয়, বরং একটি বৃহৎ প্রবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জাতীয় দাবি হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। এই বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনের প্রতি চাপও বাড়ছে, যারা ইতোমধ্যেই দেশের আগামী নির্বাচনের রূপরেখা নির্ধারণে কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, জামায়াত কখনোই নির্বাচন বিমুখ নয়, বরং আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলেই দল সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে।

এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াতে ইসলামীর এই তৎপরতা দলটির রাজনৈতিক পুনর্গঠনের অংশ এবং প্রবাসী ভোটাধিকার ইস্যুটিকে সামনে রেখে তারা আবারো জাতীয় রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে উঠে আসার কৌশল গ্রহণ করেছে।

সব মিলিয়ে, প্রবাসী ভোটাধিকার, রাজনৈতিক স্বীকৃতি এবং নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনের প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামী তাদের অবস্থান এখন স্পষ্টভাবে জনসমক্ষে উপস্থাপন করেছে। এখন দেখার বিষয়, নির্বাচন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট মহল এই দাবিগুলোর প্রতি কী ধরনের প্রতিক্রিয়া জানায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর

স্বত্ব © ২০২৫ একটি বাংলাদেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ইবনে আম্বিয়া