প্রকাশ: ১৬ জুন, ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সংকট সমাধানে যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে এক মন্তব্য করে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সমস্যা সমাধানে কখনো কখনো যুদ্ধও করতে হয়।” এই বক্তব্যে ট্রাম্প তাঁর পূর্ববর্তী অবস্থানকে পুনর্ব্যক্ত করলেন—যেখানে তিনি প্রয়োজনে সামরিক শক্তি ব্যবহারের পক্ষপাতী বলে ইঙ্গিত দেন।
এই মন্তব্য তিনি করেন জি-৭ সম্মেলনে অংশ নিতে কানাডার উদ্দেশে যাত্রার আগে হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়। সোমবার (১৬ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য প্রকাশ করে। এমন সময় ট্রাম্প এ মন্তব্য করলেন, যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে এবং দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
যদিও ট্রাম্প সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেননি, তবুও তিনি এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আমার বিশ্বাস, ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে একটি চুক্তি হবে এবং হওয়া উচিত।” তিনি স্পষ্ট করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র রাষ্ট্র ইসরাইলকে সবসময় সমর্থন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এই সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
তবে ইরানের ওপর ইসরাইলের চলমান সামরিক হামলা বন্ধ করতে তিনি কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ করেছেন কি না—এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাঁর এড়িয়ে যাওয়ার ভঙ্গিমা পর্যবেক্ষকদের মধ্যে জল্পনা বাড়িয়েছে যে, ওয়াশিংটন হয়তো ইসরাইলের কঠোর অবস্থানে মৌন সমর্থন দিয়ে চলেছে।
এছাড়া, রোববার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একই ধরনের বার্তা দেন। সেখানে তিনি লেখেন, “ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে একটি চুক্তি হওয়া উচিত এবং আমি নিশ্চিত, তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে।” এই পোস্ট থেকে বোঝা যায়, ট্রাম্প সংকটের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তিতে আশাবাদী হলেও প্রয়োজন হলে শক্তি প্রয়োগকে পুরোপুরি নাকচ করছেন না।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই ধরনের মন্তব্য তাঁর পুরোনো রাজনৈতিক ধারা অনুসরণ করে—যেখানে একদিকে তিনি কঠোর অবস্থান নেন, অন্যদিকে কূটনৈতিক সমঝোতার দরজাও খোলা রাখেন। তাঁর প্রশাসনের নীতিতে শক্তি প্রদর্শন এবং কৌশলগত আলোচনার সমন্বয়ই বরাবর লক্ষ্য করা গেছে।
বর্তমানে ইসরাইল-ইরান উত্তেজনা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তাকেই নয়, বরং বৈশ্বিক রাজনীতিকেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। এমন এক সময়ে ট্রাম্পের এই বক্তব্য নানা মাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাঁর এই মন্তব্য পরিস্থিতির ওপর মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি, নীতিগত অবস্থান এবং ভবিষ্যতের পদক্ষেপ সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়, যা বিশ্ব রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।