প্রকাশ: ১৬ জুন, ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । একটি বাংলাদেশ অনলাইন
নতুন প্রতিবেদন অনুযায়ী, হঠাৎ করে দেশে অবস্থানরত বিদেশিরা এবং বাংলাদেশের নাগরিকরা ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রায় আমানত জমা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতে দেশের ব্যাংকগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রার আমানতের পরিমাণ গত এক বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিদেশি মুদ্রায় আমানতের বৃদ্ধি দেশের অন্যান্য সাধারণ আমানতের তুলনায় অনেক বেশি।
এই প্রবণতা মূলত ২০২৩ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকেই বাড়তে শুরু করে। তখন থেকে জনগণের ঘরে থাকা ডলার ও অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা ফের ব্যাংকিং খাতে ফিরতে শুরু করে। এতে সহায়ক ভূমিকা রাখে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ, যেমন আবাসিক বৈদেশিক মুদ্রা আমানত (আরএফসিডি) হিসাবের ওপর সুদসহ নানা সুবিধা প্রদান।
২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে অবস্থানকারী বিদেশিদের টাকায় রূপান্তরযোগ্য হিসাবে জমা বেড়ে ৩,৮৫৯ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যেখানে এক বছর আগে ছিল ১,৮০৪ কোটি টাকা। একই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব (এফসিএ) আমানতও বেড়ে দাঁড়ায় ১৪,৭৫০ কোটি টাকায়, যা আগের বছর ছিল ৬,০৫৪ কোটি টাকা।
প্রবাসীদের আমানতের ক্ষেত্রেও সামান্য বৃদ্ধি হয়েছে—৩,৪৭৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৪,৭৭৮ কোটি টাকা হয়েছে। আর বিদেশ সফর শেষে দেশে ফেরা নাগরিকদের আরএফসিডি হিসাবে আমানত ২৬,১৩০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩৩,২৭৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
এই আমানত বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে ডলার জমা রাখার ওপর সুদের সুবিধা, বিদেশ ভ্রমণে সহজ লেনদেনের সুযোগ এবং বিভিন্ন মুদ্রায় হিসাব খোলার সহজতা। পাশাপাশি প্রবাসীদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার সুদের হার এখন বাজারনির্ভর হওয়ায় আরও বেশি মানুষ এসব হিসাব খোলায় আগ্রহী হচ্ছেন।
এদিকে দেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়া এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে বিদেশিদের আস্থা ফিরেছে, যার ফলে তারাও ব্যাংকে অর্থ জমা বাড়াচ্ছেন। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, বৈদেশিক মুদ্রায় আমানতের এই প্রবণতা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক সংকেত।