প্রকাশ: ০৯ই জুন’ ২০২৫ | একটি বাংলাদেশ ডেস্ক |
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে চলমান সহিংসতা ও দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ন্যাশনাল গার্ড ব্যর্থ হওয়ায় এখন মার্কিন মেরিন বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। গত কয়েক দিনে শহরটির পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অবনতি হয়েছে, যেখানে বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশ-প্রতিবাদকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।
গত ৬ জুন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর একটি বড় ধরনের অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয়। এদিন ৪৪ জনকে গ্রেফতারের পর পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং কংক্রিট ও ভাঙা ইটপাথর নিক্ষেপ করে।
পরবর্তী দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে মোড় নেয়। ৭ জুন পারামাউন্ট ও কম্পটন এলাকায় পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে গুলি, ফ্ল্যাশ-ব্যাং ও রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়। উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২,০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের নির্দেশ দেন। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বেস এই সিদ্ধান্তকে “অবৈধ ও অত্যধিক” বলে আখ্যায়িত করে ফেডারেল সরকারের সমালোচনা করেন।
৮ ও ৯ জুন ন্যাশনাল গার্ডের উপস্থিতি সত্ত্বেও সহিংসতা কমার বদলে বেড়েই চলেছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পরিবহন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঢাকা ১০১ ফ্রিওয়ে অবরোধ করা হয়েছে এবং স্বয়ংক্রিয় ওয়ামো গাড়ি ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেজেট সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “সহিংসতা অব্যাহত থাকলে সক্রিয় মেরিন বাহিনী মোতায়েন করা হতে পারে।” ইতোমধ্যে ক্যাম্প পেন্ডেলটন থেকে প্রায় ৫০০ মেরিন সদস্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংকটে ফেডারেল সরকার ও ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য সরকারের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। গভর্নর নিউজম ও মেয়র বেস ফেডারেল বাহিনীর মোতায়েনকে রাজ্যের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ প্রধান জিম ম্যাকডোনেল স্বীকার করেছেন যে প্রতিবাদ “দিন দিন আরও সহিংস ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।”
একটি বাংলাদেশ অনলাইন এর খোঁজ নিয়ে জানায়, আইসিই’র অভিযানকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট এই সংকট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিকে ঘিরে দীর্ঘদিনের উত্তেজনারই ফল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক বিভক্তি ও প্রশাসনিক দ্বন্দ্ব এই সংকটকে আরও জটিল করে তুলছে।
বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল। শহরটির বাসিন্দারা ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এই সংঘাতের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।