প্রকাশ: ১৮ই জুন ২০২৫ | নিজস্ব সংবাদদাতা | একটি বাংলাদেশ অনলাইন
ব্রিটেনের উচ্চ-গতির রেল প্রকল্প HS2 আবারও দেরির মুখে পড়েছে। আজ যুক্তরাজ্যের নতুন পরিবহনমন্ত্রী হেইডি আলেকজান্ডার এই প্রকল্পকে সরাসরি “একটি ভয়াবহ গণ্ডগোল” বলে অভিহিত করেছেন। ২০৩৩ সালের আগে লন্ডন থেকে বার্মিংহাম পর্যন্ত অংশের কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও তিনি জানান।
সদ্য ক্ষমতায় আসা লেবার পার্টি সরকার জানায়, HS2 প্রকল্পটি পূর্ববর্তী কনজারভেটিভ প্রশাসনের সময়ে তীব্র বাজেটের ঘাটতি, চুক্তির অসঙ্গতি, এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন পরিচালনার কারণে ভয়াবহ জটিলতায় পড়ে। হেইডি আলেকজান্ডার বলেন, “এই প্রকল্পের প্রতিটি স্তরে গাফিলতি ছিল। পরিকল্পনা ছিল অপর্যাপ্ত, ব্যয় ছিল অপ্রয়োজনীয় এবং তদারকি ছিল কার্যত অনুপস্থিত।”
প্রায় ১০০ বিলিয়ন পাউন্ডের এই প্রকল্পটি মূলত যুক্তরাজ্যের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে দ্রুতগতির রেল যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে শুরু হয়েছিল। তবে একের পর এক দেরি, বাজেট ছাড়িয়ে যাওয়া এবং কিছু রুট সম্পূর্ণ বাতিল করার কারণে এটি এখন জাতীয় বিতর্কের কেন্দ্রে।
সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, HS2 নিয়ে একটি স্বাধীন পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হবে, যারা প্রকল্পের প্রতিটি পর্যায় পর্যালোচনা করবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, HS2 এখন শুধু একটি অবকাঠামোগত প্রকল্প নয়, এটি হয়ে উঠেছে ব্রিটিশ সরকারের দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জনঅর্থ ব্যবস্থাপনার প্রশ্নে এক লজ্জার প্রতীক। অনেকেই মনে করছেন, এই প্রকল্পের ব্যর্থতা ব্রিটিশ জনগণের উপর দীর্ঘমেয়াদে বিশাল আর্থিক চাপ ফেলবে।
একইসঙ্গে নতুন সরকার আশা করছে যে, স্বচ্ছ তদন্ত ও কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এমন বিশাল প্রকল্পে রাষ্ট্রীয় বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
এই মুহূর্তে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হলেও, সরকারের প্রতিশ্রুতি—এই ‘গণ্ডগোলের’ একটি পূর্ণ তদন্ত হবে এবং জনগণ জানবে কীভাবে একটি স্বপ্নের প্রকল্প ধীরে ধীরে দুর্নীতি ও গাফিলতির প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠলো।