প্রকাশ: ০৬ জুলাই’ ২০২৫ । একটি বাংলাদেশ ডেস্ক | একটি বাংলাদেশ অনলাইন
দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মতবিরোধের প্রেক্ষাপটে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এক সরব ও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, বর্তমান সময়ের সব বিতর্ক, প্রচারণা এবং ক্ষমতাসীন দলের অপপ্রচারের মাঝেও জনগণের মন থেকে বিএনপির জনপ্রিয়তা মুছে দেওয়া যায়নি। বরং, ভোটের মাঠে এখনো বিএনপি-ই সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রোববার (৬ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। সভাটির আয়োজন করা হয়েছিল ২০১৮ সালে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ফারুকের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে। এই সভায় মান্না বলেন, “রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যে মব কালচার গড়ে তোলা হয়েছে, তা দিয়ে বিএনপির প্রকৃত জনভিত্তিকে নস্যাৎ করা যাবে না। জনগণের ভালোবাসা এবং তাদের রায় এখনো বিএনপির পক্ষে।”
আলোচনায় মান্না বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি অতীতের নির্যাতনের প্রসঙ্গও টানেন। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে বিএনপি। দীর্ঘ সময় ধরে কারাবন্দি, হামলা, মামলা আর গুম-খুনের আতঙ্কে নেতাকর্মীরা জীবনযাপন করেছে। তবুও তারা প্রতিশোধের পথে হাঁটেনি।”
তার মতে, এখন সময় হয়েছে দেশকে গড়ার। একে ভাঙার, হিংসার বা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে ফেরত যাওয়ার সময় নয়। মান্না দেশবাসীকে মনে করিয়ে দেন, গণতন্ত্র মানেই মতের ভিন্নতা, কিন্তু সে ভিন্নতা কখনোই সহিংসতায় পরিণত হওয়া উচিত নয়।
তিনি আরো বলেন, “আজকে বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই দাঁড়িয়ে আছে, এই শক্তি কোনো দমন-পীড়ন দিয়ে নষ্ট করা যাবে না। যারা মনে করছে শুধু দমননীতি, মামলা, হুলিয়া দিয়ে জনপ্রিয়তা নিঃশেষ করা যাবে, তারা রাজনীতির বাস্তবতা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে মাহমুদুর রহমান মান্না রাজনীতিতে একটা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা দিতে চেয়েছেন, যেখানে ভিন্ন মত থাকবে, কিন্তু সহিংসতা নয়। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলছেন, প্রতিহিংসার রাজনীতি দেশকে এগিয়ে নিতে পারে না। বরং বিরোধীদলের ওপর ধারাবাহিক নির্যাতন আর অবমূল্যায়নই দেশের গণতন্ত্রকে আরও দুর্বল করে তুলছে।
সভায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য বক্তারাও মান্নার বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং দ্রুত বিচার ও জবাবদিহিতার দাবি জানান। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীরাও।
এই বক্তব্য ও আলোচনা নতুন করে তুলে ধরছে দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার এক গুরুত্বপূর্ণ দিক—যেখানে জনপ্রিয়তা, গণসমর্থন ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিষযগুলো আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।